বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন? ফিলিস্তিন সংকট নিয়ে ট্রাম্পের নতুন বক্তব্য

যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন

যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন : ফিলিস্তিনের গাজা থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানানোর পর এবার কিছুটা ভিন্ন সুরে কথা বললেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্প জানিয়েছেন, শিগগিরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করবেন।

দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান

সোমবার (২৯ জানুয়ারি) মার্কিন প্রেসিডেন্টের ব্যবহৃত উড়োজাহাজ এয়ারফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে গাজা প্রসঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, বহু বছর ধরে গাজা একটি ‘নরকে’ পরিণত হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা যেন শান্তিপূর্ণভাবে জীবনযাপন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করাই তাঁর উদ্দেশ্য।

যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কি দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের পক্ষে? ট্রাম্প জানান, নেতানিয়াহু শিগগিরই ওয়াশিংটন সফরে আসবেন এবং তখন এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

কাতারের অবস্থান

কাতারও ফিলিস্তিন সংকট সমাধানে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের পক্ষে মত দিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, “ফিলিস্তিনিদের অধিকার নিশ্চিত করতে হলে একমাত্র সমাধান হলো দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান।”

গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরানোর প্রস্তাব ও প্রতিক্রিয়া

এর আগে ট্রাম্প ফিলিস্তিনিদের মিসর, জর্ডান ও অন্যান্য আরব দেশে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যা মিসর ও জর্ডান প্রত্যাখ্যান করে। ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসও এই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়। তবে সোমবার ফের একই প্রস্তাব দেন ট্রাম্প।

যুদ্ধবিরতির পর উত্তর গাজায় ফেরা ৩ লাখ মানুষ

গাজায় যুদ্ধবিরতির পর বহু ফিলিস্তিনি তাঁদের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া ঘরে ফিরছেন। হামাসের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (২৯ জানুয়ারি) গাজার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চল থেকে উত্তরে ফিরেছেন ৩ লাখের বেশি মানুষ। পথের দুর্ভোগ পেরিয়ে ফেরা এই মানুষদের জন্য পরিস্থিতি অত্যন্ত করুণ।

যুদ্ধবিরতির পরবর্তী ধাপ, যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন?

গাজায় যুদ্ধবিরতি তিন ধাপে কার্যকর হবে।

  1. প্রথম ধাপ: ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতি চলবে, যেখানে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করবে হামাস, আর কয়েক শ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল।
  2. দ্বিতীয় ধাপ: এই ধাপে আরও ৬০ জন জিম্মিকে মুক্ত করবে হামাস এবং ইসরায়েল পুরোপুরি গাজা থেকে সামরিক বাহিনী সরিয়ে নেবে। এ নিয়ে মিসরে আলোচনার জন্য হামাসের প্রতিনিধিদল ইতোমধ্যে কায়রো পৌঁছেছে।
  3. তৃতীয় ধাপ: দ্বিতীয় ধাপে ইতিবাচক অগ্রগতি হলে যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হতে পারে।

হামাস নেতা সামি আল জুহরি জানিয়েছেন, নেতানিয়াহুর সামনে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ মেনে নেওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অবস্থান থেকে স্পষ্ট যে, যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিন সংকটে নতুন নীতির দিকে যেতে পারে। তবে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধান কতটা বাস্তবায়নযোগ্য হবে, তা নির্ভর করবে ইসরায়েল, হামাস ও আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের ভূমিকায়।

guest
0 মতামত সমুহ
Inline Feedbacks
View all comments