বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আর্জেন্টিনার গোলবন্যায় ভেসে গেল ব্রাজিল: অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে ঐতিহাসিক পরাজয়

আর্জেন্টিনার গোলবন্যায়

আর্জেন্টিনার গোলবন্যায় ভেসে গেল ব্রাজিল: দক্ষিণ আমেরিকার অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ব্রাজিলের পরাজয় একটি ঐতিহাসিক দুঃস্বপ্ন হয়ে রইল। গত রাতে আর্জেন্টিনার কাছে ৬-০ গোলে হেরেছে ব্রাজিল, যা জাতীয় দলের যে কোনো স্তরে তাদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের হার। এই হারে ব্রাজিল সমর্থকরা দীর্ঘশ্বাস ফেললেও কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন এই ভেবে, ২০১৪ সালের জার্মানির ‘সেভেন আপ’ দুঃস্বপ্ন এবারও ফিরে আসেনি।

প্রথমার্ধেই খেলা শেষ

স্পেনের ভ্যালেন্সিয়ার মিসায়েল দেলগাদো স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনা প্রথম ১১ মিনিটেই তিনটি গোল করে ব্রাজিলকে কোণঠাসা করে ফেলে। রিভার প্লেটের প্রতিভা ইয়ার সুবিয়াব্রের ৬ মিনিটের গোলের মাধ্যমে গোলবন্যার শুরু হয়। ম্যানচেস্টার সিটির (ধারে রিভার প্লেটে) তারকা ক্লদিও এচেভেরি ৮ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করেন। এরপর ১১ মিনিটে ব্রাজিলের ডিফেন্ডার ইগর সেরাতোর আত্মঘাতী গোলের মাধ্যমে আর্জেন্টিনা ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।

দ্বিতীয়ার্ধেও থেমে থাকেনি আর্জেন্টিনা

বিরতির পর আর্জেন্টিনা আরও তিনটি গোল করে তাদের জয়ের ব্যবধান নিশ্চিত করে। ৫২ এবং ৫৪ মিনিটে অগাস্তিন রুবের্তো এবং ক্লদিও এচেভেরি আবারও গোল করেন। ম্যাচের শেষ গোলটি করেন সান্তিয়াগো হিদালগো, যা ব্রাজিলের পরাজয়ের শিলমোহর হিসেবে রয়ে গেল।

আর্জেন্টিনার গোলবন্যায় তৈরি হয়েছে ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়

জাতীয় দলের যে কোনো স্তরে ব্রাজিলের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার এটি সবচেয়ে বড় জয়। এর আগে ১৯৪০ সালে রোকা কাপে আর্জেন্টিনা ব্রাজিলকে ৬-১ গোলে হারিয়েছিল। দীর্ঘ ৮৫ বছর পর আবার ব্রাজিলের বিপক্ষে এমন একটি ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়ে রেকর্ড নতুন করে লিখল আর্জেন্টিনা।

ব্রাজিলের লজ্জা আর আর্জেন্টিনার আনন্দ

ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম এই হারকে ‘লজ্জাজনক’ এবং ‘ভরাডুবি’ বলে অভিহিত করেছে। অন্যদিকে আর্জেন্টিনায় চলছে বিজয়ের উচ্ছ্বাস। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্রাজিলকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা রকম মিম।

প্লাসেন্তের কোচিংয়ে আর্জেন্টিনার দারুণ শুরু

ডিয়েগো প্লাসেন্তের অধীনে আর্জেন্টিনা অনূর্ধ্ব-২০ দলের এটি প্রথম ম্যাচ ছিল। গত ডিসেম্বরে হাভিয়ের মাচেরানোর স্থলাভিষিক্ত হয়ে তিনি দলের দায়িত্ব নেন। কোচ প্লাসেন্তে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে খেলা শীর্ষ খেলোয়াড়দের নিয়ে এই দল সাজান এবং তা তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দারুণ সাফল্য এনে দেয়।

বিশ্বকাপের পথে এগিয়ে চলা

আগামী সেপ্টেম্বরে চিলিতে অনুষ্ঠিত হবে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপ। দক্ষিণ আমেরিকার এই চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে শীর্ষ চারটি দল সেখানে জায়গা করে নেবে। বর্তমানে ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনা উভয় দলই এই চ্যাম্পিয়নশিপে ভালো অবস্থানে থেকে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার জন্য লড়াই করছে।

এই জয় আর্জেন্টিনার জন্য একদিকে যেমন গৌরবের, তেমনি ব্রাজিলের জন্য এক বড় শিক্ষা। ক্লদিও এচেভেরির মতো প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা আর্জেন্টিনার ভবিষ্যতের আশা হয়ে উঠছেন। অন্যদিকে ব্রাজিলের জন্য এটি শুধুই নয়, তাদের ফুটবল উন্নয়নে পুনরায় ভাবার সময় এনে দিয়েছে।

guest
0 মতামত সমুহ
Inline Feedbacks
View all comments