বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা-র ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতি গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছেন লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতি গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছেন লন্ডন ক্লিনিকের চিকিৎসকরা। প্রখ্যাত চিকিৎসক প্রফেসর জন প্যাট্রিক কেনেডির নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ড তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ মডেলে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার সুপারিশ করেছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া গত ৮ জানুয়ারি থেকে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি রয়েছেন। তার বিভিন্ন পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে চিকিৎসকরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছেন। আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে আরও দুইজন লন্ডনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তাকে পর্যবেক্ষণ করবেন।
জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার বর্তমান চিকিৎসা পদ্ধতিতে লিভার, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসসহ বিভিন্ন সমস্যার জন্য আলাদা ওষুধ চলছে। এসব চিকিৎসা যাতে একটি সমন্বিত কাঠামোর অধীনে পরিচালিত হয়, সে লক্ষ্যেই ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ প্রক্রিয়া চালু করা হবে। চিকিৎসার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স হাসপাতালের বিশেষজ্ঞরাও পরামর্শ দিয়েছেন।
জাহিদ হোসেন উল্লেখ করেন, গত সাড়ে পাঁচ বছর ধরে বন্দি থাকার কারণে খালেদা জিয়ার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে ক্ষতি হয়েছে। সুচিকিৎসার অভাব এবং বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ না পাওয়ায় তার শারীরিক জটিলতা বেড়েছে। এসব বিবেচনায় তার জন্য সর্বোত্তম চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে।
চিকিৎসার অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য লন্ডন এবং অন্যান্য দেশের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড শিগগিরই একটি বৈঠক করবে। জাহিদ হোসেন জানান, এই বৈঠকের সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তী চিকিৎসা পরিচালিত হবে।
লন্ডনে চিকিৎসা কার্যক্রমের সঙ্গে বিএনপির লন্ডন শাখার সভাপতি এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদসহ বেশ কয়েকজন ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন। এছাড়া ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও বিষয়টি তদারকি করছেন।
৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্টের সমস্যা, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। তার শরীরের অবস্থা বিবেচনা করে যুক্তরাজ্যের হাসপাতালে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
এর আগে, সাড়ে সাত বছর আগে যুক্তরাজ্যে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সে সময় তিনি চোখ ও পায়ের চিকিৎসা নিয়েছিলেন।
দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পাঁচ মাস পর, ৭ জানুয়ারি তিনি চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে গমন করেন। প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রেও চিকিৎসার পরিকল্পনা ছিল, তবে বর্তমানে যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা নেওয়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে যেমন উদ্বেগ রয়েছে, তেমনি তার দ্রুত আরোগ্য কামনায় দেশজুড়ে শুভানুধ্যায়ীরা প্রার্থনা করছেন।
সায়মন ইসলাম