অবৈধ ইটভাটা ও ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে কাঠের ব্যবহার বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনার বিভাগীয় কমিশনারকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং সাভার-ধামরাই উপজেলার ইউএনওকেও তলব করা হয়েছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি তাদের আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
হাইকোর্টের নির্দেশ
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তানিম খান, মহসীন কবির রকি এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।
রিট আবেদন ও আদালতের রুল
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, ২০২২ সালে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) একটি রিট পিটিশন দাখিল করে। শুনানি শেষে ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর আদালত রুল জারি করে এবং অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দেন।
কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও অবৈধ ইটভাটাগুলো কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিভাগীয় কমিশনাররা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ায়, ২০২৩ সালের ২৮ নভেম্বর আদালত তাদের কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন। পরে বিভাগীয় কমিশনাররা আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। পর্যালোচনায় দেখা যায়, পূর্বে বন্ধ করা ইটভাটাগুলোর নাম শুধু পুনরায় তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে, কার্যত সব অবৈধ ইটভাটা চালু রয়েছে।
আদালতে নতুন আবেদন ও শুনানি
এই অবস্থায়, এইচআরপিবির পক্ষ থেকে একটি সম্পূরক আবেদন দাখিল করা হয়, যেখানে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও ইউএনওদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
আজ শুনানি শেষে আদালত নির্দেশ দেন যে, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনার বিভাগীয় কমিশনার এবং নীলফামারী, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসকসহ সাভার ও ধামরাই উপজেলার নির্বাহী অফিসারদের আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে হবে।
পরিবেশ রক্ষা ও অবৈধ ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে হাইকোর্টের এই নির্দেশনা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই পদক্ষেপ বাস্তবায়ন হলে, পরিবেশ দূষণ হ্রাস পাবে এবং কাঠের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার উৎসাহিত হবে।