পঞ্চগড়ে আগস্ট বিপ্লবে অংশ নেয়া তরুণ রিকশাচালক আল আমিন নিখোঁজের তিন মাস পেরিয়ে গেলেও তার সন্ধান মেলেনি। পরিবারের ধারণা, তাকে হত্যার পর গুম করে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনসহ দলটির নেতাকর্মীদের আসামি করে মামলা করেছেন নিখোঁজ আল আমিনের বাবা মনু মিয়া। রোববার (১০ নভেম্বর) পঞ্চগড় সদর থানায় এই মামলা করেন তিনি।
মামলায় সাবেক রেলমন্ত্রী ছাড়াও পঞ্চগড়-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ নাঈমুজ্জামান ভূইয়া ও মজাহারুল হক প্রধান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত সম্রাট, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম পল্লব, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু মো. নোমান হাসান, সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাদিক প্লাবন, পঞ্চগড় পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আশরাফুল ইসলাম ও হাসনাত মো. হামিদুর রহমান, পঞ্চগড় পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আল তারিক, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির উজ্জলসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে মামলাটি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আল আমিনের (২১) বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলা দর্জিপাড়া এলাকায়। পেশায় রিকশাচালক আল আমিন পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। ৫ আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে পঞ্চগড় চৌরঙ্গী মোড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে অংশ নেন তিনি। দুপুরে দুইজনের সাথে বাড়ি ফেরার পথে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদমান সাদিক পাটোয়ারী প্লাবনের বাড়ির সামনে তাকে আটক করা হয়। পরে আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশে তার ওপর হামলা করা হয়।
এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আল আমিনকে এলোপাথারি আঘাত করা হয়। তারপর তাকে টেনেহিঁচড়ে ছাত্রলীগ নেতা প্লাবনের বাড়ির দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। আল আমিনের সাথে থাকা রায়হানুল ইসলাম রিফাত ও সুজন ইসলামকে আহত অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে, রাতে বাড়ি না ফিরলে খোঁজাখুঁজি শুরু করে আল আমিনের পরিবার। ১৪ আগস্ট থানায় সাধারণ ডায়েরিও করে তারা।
পরে রিফাত ও সুজনের মাধ্যমে এই ঘটনা জানতে পেরে আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করে মামলা করেন আল আমিনের বাবা। পঞ্চগড় সদর থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।