চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট বন্দর সংযোগ সড়কে রাস্তায় পড়ে থাকা অজানা সাদা পাউডার শনাক্ত করতে নমুনা সংগ্রহ করেছে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি বিশেষজ্ঞ দল।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও গবেষণা কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন। প্রাথমিকভাবে তাঁদের ধারণা, পদার্থটি পার্লাইট পাউডার, যা স্ক্র্যাপ জাহাজে ব্যবহৃত হয়।
দলটির অন্য দুই সদস্য হলেন চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ রসায়নবিদ হোযায়ফা সরকার ও নমুনা সংগ্রহকারী মাহবুবুল আলম।
ঘটনাস্থলে কথা হয় পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আশরাফ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রথম আলোতে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে তাঁরা সাদা পাউডারের নমুনা সংগ্রহ করতে সেখানে যান। সড়কের বেশ কয়েকটি স্থানে স্তূপ করে রাখা পাউডার দেখতে একই রকম। এসব পাউডার কারা ফেলে গেছে, সে বিষয়েও কেউ কিছু বলতে পারছেন না। এগুলো আসলে কী ধরনের পদার্থ, তা নিশ্চিত করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।
এর আগে গত সোমবার সকালে প্রথম আলো অনলাইন সংস্করণে ‘সীতাকুণ্ডের রাস্তায় রাস্তায় ছড়ানো সাদা পাউডার, বাতাসে উড়ে ঢুকছে শরীরে’ শিরোনাম একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
সংগ্রহের পর এসব নমুনা পরিবেশ অধিদপ্তরের ঢাকা গবেষণাগারের কার্যালয়ে পাঠানো হবে বলে জানান আশরাফ উদ্দিন। তাঁর মতে, সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পদার্থটির বিষয়ে জানা যাবে। পদার্থটি শনাক্তের পর বোঝা যাবে, এটি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কি না।
আশরাফ উদ্দিনের ভাষ্য, পাউডারগুলো যদি পার্লাইট পাউডার হয়, তাহলে মানুষের শরীরের জন্য তেমন ক্ষতিকর নয়। তবে গাছের লতাপাতা পাউডারের ঢেকে গেলে এর প্রস্বেদন বাধাগ্রস্ত হয়। এসব পাউডারের উৎস সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, সাধারণত এসব পাউডার জাহাজভাঙা কারখানায় আনা দাহ্য পদার্থ বহনকারী স্ক্র্যাপ জাহাজ থেকে পাওয়া যায়। এ ছাড়া বন্দরেও পাওয়া যেতে পারে। জাহাজভাঙা কারখানা থেকে সড়কের পাশে এসব পদার্থ ফেলে যেতে পারে। তবে তাঁর জানামতে, পার্লাইট পাউডার আছে, এমন স্ক্র্যাপ জাহাজ সীতাকুণ্ড উপকূলের জাহাজভাঙা কারখানাগুলোতে নেই।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট বন্দর সংযোগ সড়কের ১২ কিলোমিটারের মধ্যে ১০টি স্থানে স্তূপ করে এসব সাদা পাউডার ফেলা হয়েছে। সড়কটি দিয়ে গাড়ি চলাচলের সময় পাউডারগুলো উড়তে থাকে।