বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫
১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিশ্বজুরে বায়ুদূষন এর শীর্ষে কলকাতা,ঢাকার অবস্তাও আশঙ্কাজনক

বিশ্বজুরে বায়ুদূষন এর শীর্ষে কলকাতা,ঢাকার অবস্তাও আশঙ্কাজনক

বিশ্বজুড়ে বায়ুদূষন এর শীর্ষ তালিকায় এশিয়ার শহরগুলোর উপস্থিতি প্রায় নিয়মিত

বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার মেগাসিটিগুলো বায়ুদূষণের ক্ষেত্রে গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ দশ দূষিত শহরের মধ্যে ছয়টিই দক্ষিণ এশিয়ার, যার মধ্যে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা অন্যতম। আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের তথ্যমতে, শনিবার (১১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) স্কোর ছিল ২৩০। এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে চিহ্নিত। শীত মৌসুমে ঢাকার বাতাসের গুণমান আরও অবনতি ঘটে, যা বসবাসকারীদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে। এই পরিস্থিতিতে, বায়ুদূষণের তালিকায় ঢাকা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।

বিশ্বজুরে বায়ুদূষন তালিকার শীর্ষে রয়েছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতা। সেখানে AQI স্কোর ৩৪৬, যা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত। এছাড়া তৃতীয় থেকে পঞ্চম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মুম্বাই (২১৭), দিল্লি (২১৫) এবং উজবেকিস্তানের তাশখন্দ (১৯০)। বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। এ প্রতিষ্ঠান একটি শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে তথ্য দেয় এবং মানুষকে সতর্ক করে। একিউআই (AQI) নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে। এর মধ্যে রয়েছে বস্তুকণা (PM10 ও PM2.5), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (NO₂), কার্বন মনোক্সাইড (CO), সালফার ডাই-অক্সাইড (SO₂) এবং ওজোন (O₃)।

বায়ুমানের এই সূচক শূন্য থেকে ৫০ পর্যন্ত স্কোর ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ পর্যন্ত স্কোর মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত হয়। ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু হিসেবে গণ্য করা হয়। স্কোর যদি ২০০’র বেশি হয়, তাহলে সেটি খুবই অস্বাস্থ্যকর হিসেবে চিহ্নিত হয়। সর্বশেষ, একিউআই স্কোর ৩০০ অতিক্রম করলে সেই বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

দক্ষিণ এশিয়ার শহরগুলোর এভাবে দূষণের তালিকায় উঠে আসা এ অঞ্চলের পরিবেশ দূষণ, অপরিকল্পিত নগরায়ন, এবং শিল্প-কারখানার আধিক্যের একটি ভয়াবহ চিত্র ফুটিয়ে তোলে। ক্রমবর্ধমান দূষণের কারণে এ অঞ্চলের শহরগুলোতে বাসিন্দারা শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, ফুসফুসের সমস্যা, এমনকি ক্যানসারের মতো জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বায়ুদূষণ মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। সরকারি পর্যায়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগ, পরিবেশবান্ধব জ্বালানির ব্যবহার, এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধি এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

-সায়মন ইসলাম

guest
0 মতামত সমুহ
Inline Feedbacks
View all comments