যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ভয়াবহ দাবানলে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ জনে
দাবানলের ফলে ১০ হাজারের বেশি বাড়ি, অন্যান্য ভবন এবং অবকাঠামো পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এছাড়াও, বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে এবং পরিস্থিতি এখনও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।শুক্রবার লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি শেরিফ রবার্ট লুনার বরাতে ইউরো নিউজ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। শেরিফ রবার্ট লুনার বলেন, “এটি আমার জীবনে দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ আগুন। মনে হচ্ছে যেন এই এলাকায় একটি পারমাণবিক বোমা ফেলা হয়েছে।”
গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া এই দাবানল এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে। লস অ্যাঞ্জেলেসের কর্তৃপক্ষ দাবানল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও, এখনও পরিস্থিতি অনিয়ন্ত্রিত। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, শহরের ছয়টি আলাদা দাবানল একাধিক এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে এবং অনেকটি আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। হারিকেনের তীব্রতার বাতাস, শুষ্ক আবহাওয়া এবং পানির সংকটের কারণে আগুন নেভাতে দমকল কর্মীরা বেশ সমস্যায় পড়ছেন।
মার্কিন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, দাবানলের তীব্রতা এতটাই বেশি যে, ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের বদলে সাধারণ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার কাজ করছেন। এ কারণে হতাহতের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অত্যন্ত বেশি হয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের ফায়ার সার্ভিসের প্রধান অ্যান্থনি ম্যারন জানিয়েছেন, দাবানল নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যালিফোর্নিয়ায় আরও ছয়টি অঙ্গরাজ্য থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের পাঠানো হয়েছে। তবে আগুন নেভানোর কাজে নতুন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে পানি সরবরাহের অভাব। প্যাসিফিক প্যালিসেইডস এলাকার কিছু জায়গায় আগুন নেভানোর জন্য হাইড্রেন্ট শুকিয়ে গেছে।
এদিকে, লস অ্যাঞ্জেলেসের দুই লাখেরও বেশি বাসিন্দাকে নিরাপদে সরে যেতে বলা হয়েছে। দাবানলে ইতোমধ্যে ৫০ বিলিয়ন বা পাঁচ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা একে ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ দাবানল হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, দাবানল আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং এর নিয়ন্ত্রণ পেতে আরও সময় লাগবে। সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও, শীতল আবহাওয়া ও পরিবেশগত পরিস্থিতির কারণে আগুন নেভানোর কাজ বেশ জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
-সাইমন ইসলাম