যারা এত দিন গুম-খুন আর আয়নাঘরের সংস্কৃতি তৈরি করেছিল, তারা যদি পুনর্বাসিত হয় তাহলে এ দেশে আর মানুষ বসবাস করতে পারবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, কেউ কেউ যখন স্বৈরাচার পুনর্বাসনের কথা বলেন, তখন বিপজ্জনক বার্তা যায় জনগণের কাছে। পতিত স্বৈরাচার আবার পুনর্বাসিত হলে এই দেশ হবে জল্লাদের উল্লাসভূমি। এখানে গণতন্ত্র, কথা বলা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চিরদিনের জন্য গোরস্তানে চলে যাবে।
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে গণসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণকালে বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন।
পতিত স্বৈরাচারের সহযোগী পুলিশ কর্মকর্তাদের এখনো বিভিন্ন জায়গায় পদায়নের সমালোচনা করেন রিজভী। তিনি বলেন, যারা গুম-খুন, আয়নাঘরের সংস্কৃতি চালু করেছিল, গণতন্ত্রকামী মানুষকে ধরে নিয়ে গিয়ে বছরের পর বছর আটকে রেখেছিল, মেরে হাত-পা ভেঙে দিয়েছিল, জীবন কেড়ে নিয়েছিল, সেই সব পুলিশ কর্মকর্তাকে পোস্টিং দেওয়া হচ্ছে কাউকে গুলশানে, কাউকে মিরপুরে, কাউকে আজিমপুরে…। এটা হতে পারে না। এটাই যদি উদ্দেশ্য হয় এই অন্তর্বর্তী সরকারের, তাহলে ছাত্র-জনতার এই আত্মত্যাগের কী হবে।
‘পররাষ্ট্রসচিব নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন’
বিতর্কিত একজন কর্মকর্তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব নিয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এই বিএনপির নেতা। তিনি বলেন, ‘একজন রাষ্ট্রদূত কাতারে ছিলেন… কাতারে (প্রবাসী) কারও যদি ভিসার মেয়াদ শেষ হতো, সেগুলো তিনি নবায়ন করতেন না। তিনি (রাষ্ট্রদূত) খবর নিতেন ওই সমস্ত লোক কোন দল করে, কাদের সমর্থক? কারণ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অধিকাংশ প্রবাসী বিএনপির সমর্থক। তাদের তিনি (রাষ্ট্রদূত) নানাভাবে হয়রানি করেছেন। সেই লোককে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব করা হয়েছে বলে শুনতে পারছি। তাহলে অন্তর্বর্তী সরকার কাদের পুনর্বাসন করছেন? যারা জনগণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, যারা শহীদের আত্মদান ও রক্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে তাদের?’
কারা কাতারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্রসচিব বানাচ্ছেন, এমন প্রশ্ন তুলে রিজভী প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুস সাহেবকে আমরা শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। তাঁকে তো এই বিষয়গুলো দেখতে হবে। তাঁর প্রতি জনগণের যে আস্থা—সেই আস্থা যাতে ফলপ্রসূ হয়, তাঁকে সেটা দেখতে হবে। এভাবে বিভিন্ন জায়গা ঘাপটি মারা ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। একটা সরকারে বিভিন্ন ধরনের লোক থাকতে পারে। কিন্তু যারা শেখ হাসিনার মতো ফ্যাসিস্টকে সমর্থন করে বিরোধী দল দমনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে, তাদের যদি আজকে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসানো হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের সচিব পদে নিয়োগ পায়, তাহলে এই সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হবে।’
গতকাল রোববার থেকে বিএনপি রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে এই জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ শুরু করে।