<

কেন এবং কীভাবে ঘটে চাঞ্চল্যকর সেই হত্যাকাণ্ড? রিমান্ড শেষে যা জানা গেলো

‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ছেলে তার মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে’ র‍্যাবের দেয়া এমন তথ্যের পর সমালোচনার ঝড় ওঠে চায়ের দোকান থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রতিটা জায়গায়। তবে, এমন স্টেটমেন্ট মিথ্যা প্রমাণিত হয়। পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে নিহত সেই গৃহবধু উম্মে সালমাকে (৫০) তার নিজ সন্তান হত্যা করেনি।

এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আজ রোববার (১৭ নভেম্বর) রিমান্ড শেষে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সালমাদের ভবনের ভাড়াটে মাবিয়া সুলতানা, তার পরিচিত দুজন মোসলেম উদ্দিন ও সুমন রবিদাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ ও রিমান্ড শেষে জানা গেছে, তারাই মূলত সালমাকে হত্যার পর মরদেহ ফ্রিজে রেখে দিয়েছিলেন।

এর আগে গত ১০ নভেম্বর দুপুরে চারতলা বাড়ির তিনতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে সালমার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি দুপচাঁচিয়া ডিএস ফাজিল মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমানের স্ত্রী। তারা ভবনটির মালিক। সালমাকে হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে র‍্যাব ঘটনার পরের দিন ওই দম্পতির ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুরকে (১৯) আটক করে।

এ বিষয়ে বগুড়া আদালতের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, আসামি মোসলেম আদালতে যে জবানবন্দি দিয়েছেন তাতে বলেছেন, চারতলার ভাড়াটিয়া মাবিয়া সুলতানার বাসায় বিভিন্ন লোক যাতায়াত করতেন। এতে বিরক্ত হয়ে সালমা মাবিয়াকে বাসা ছাড়তে বলেছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মোসলেম উদ্দিন ও সুমন রবিদাসকে নিয়ে সালমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মাবিয়া।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, সালমাকে হত্যার পর মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রেখে প্রধান ফটকে তালা দিয়ে চলে যান আসামিরা। সালমার বাসার চাবি রেখে দেন মাবিয়া। আর ওই বাসা থেকে খোয়া যাওয়া মুঠোফোন, ইন্টারনেট সেবায় ব্যবহৃত রাউটার মোসলেম নিজের কাছে রাখেন।

পুলিশ জানিয়েছে, সুমন রবিদাসও হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতেও রাজি হয়েছেন তিনি।

এই হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুপচাঁচিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুব্রত কুমার সিংহ বলেন, আসামি মোসলেম উদ্দিন গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। একই আদালত মাবিয়া ও সুমনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে আজ তাদের আদালতে হাজির করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এর আগে গত মঙ্গলবার সালমার বড় ছেলে নাজমুস সাকিব বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন। ওই দিনই দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে র‍্যাব-১২-এর বগুড়া ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর মো. এহতেশামুল হক খান দাবি করেছিলেন, সালমার ছোট ছেলে সাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। যা মিথ্যা প্রমাণিত হয় পুলিশের তদন্তে।