<

টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সবচেয়ে বড় হারের লজ্জায় ডুবলো বাংলাদেশ দল

তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে ১৩৩ রানে হারিয়েছে ভারত। শনিবার (১২ অক্টোবর) হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে সঞ্জু-সুরিয়াকুমারের শতরানের জুটিতে ভর করে বাংলাদেশকে ২৯৮ রানের টার্গেট দেয় স্বাগতিকরা। এই ম্যাচে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে ভারত। জবাবে নির্ধারিত ওভার শেষে ১৬৪ রান তুলতে সক্ষম হয় নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

নির্ধারিত রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই খেই হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লের ভেতরেই সাজঘরে ফেরেন ইমন, তানজিদ তামিম ও শান্ত। ইনিংসের প্রথম ৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেট হারিয়ে ৫৯ রান।

টাইগার শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন মায়াঙ্ক ইয়াদভ। ইনিংসের প্রথম বলেই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনকে সাজঘরে ফেরান তিনি। রিয়ান পরাগের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। এরপর দেখেশুনে খেলতে থাকেন তামিম-শান্ত। তবে ব্যক্তিগত ১৫ রানে ফিরে যান আরেক ওপেনার তানজিদ তামিমও। ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে বরুনের তালুবন্দি হয়ে বিদায় নেন তিনি। ক্রিজে আসেন অধিনায়ক শান্ত।

তবে বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় এদিন হাসেনি শান্তর ব্যাটও। ১৪ রান করে রবি বিষ্ণোইয়ের বলে আউট হন তিনি। তবে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন লিটন দাস। নিতিশ রেড্ডির এক ওভারে ৫টি চার হাঁকান লিটন। ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৯৪ রান।

ব্যক্তিগত ৪২ রানে বিদায় নেন লিটন দাস। লিটনের বিদায়ের পর একপ্রান্ত আগলে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন তাওহিদ হৃদয়। শেষ পর্যন্ত ৬৩ রানে অপরাজিত থাকেন হৃদয়।

এদিকে, নিজের শেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ইনিংসকে রাঙাতে পারেননি সাইলেন্ট কিলারখ্যাত মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ব্যক্তিগত ৮ রানে মায়াঙ্ক ইয়াদভের বলে রিয়ান পরাগের তালুবন্দি হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। বাকি ব্যাটারদের কেউই দুই অঙ্কের রানে পৌঁছাতে পারে নি। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১৬৪ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।

ভারতের পক্ষে ৩টি উইকেট তুলে নেন রবি বিষ্ণোই। ২টি উইকেট পান মায়াঙ্ক ইয়াদভ।

এর আগে, টস জিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় সুরিয়াকুমারের দল। এদিন একের পর এক চার ছক্কার রেশে কেঁপেছে হায়দরাবাদের রাজিব গান্ধি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম। সঞ্জু-সুরিয়াকুমারের শতরানের জুটিতে ইনিংসের শুরু থেকেই বিশাল সংগ্রহের পথে এগোতে থাকে মেন ইন ব্লু’রা।

সঞ্জু-সুরিয়াকুমারের তাণ্ডবে পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১ উইকেট হারিয়ে ৭৬ রান। এদিন পাওয়ার প্লেতে ভিন্ন চার বোলার ব্যবহার করেন অধিনায়ক শান্ত। তবে স্বাগতিক ব্যাটারদের মারমুখি ভঙ্গিমায় খেই হারান প্রত্যেকেই।

ইনিংসের শুরুতে মাহেদী হাসানের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। প্রথম ওভারে ৭ রান দেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম দুই বল ভালো করলেও তাসকিনের শেষ চার বলে টানা চারটি চার মারেন ওপেনার সঞ্জু স্যামসন। তৃতীয় ওভারে বল করতে এসে শুরুতেই অভিষেক শর্মাকে বিদায় করেন তানজিম হাসান সাকিব। ব্যক্তিগত ৪ রানে মাহেদী হাসানের তালুবন্দি হয়ে মাঠ ছাড়েন এ ওপেনার। ক্রিজে আসেন স্বাগতিক অধিনায়ক সুরিয়াকুমার। তিনিও ব্যাট হাতে মারমুখি ভূমিকায় আবির্ভূত হন।

এরপরের গল্পটা সঞ্জু-সুরিয়াকুমারের। একের পর এক চার-ছক্কায় দুজন মিলে দিশেহারা করে ফেলেন টাইগার বোলার-ফিল্ডারদের। দুজন মিলে গড়েন ১৭৩ রানের জুটি। রিশাদ হোসেনের বলে টানা ৫টি ছক্কা হাঁকান সঞ্জু। ব্যক্তিগত ১১১ রানে পারভেজ হোসেন ইমনের বলে মোস্তাফিজের তালুবন্দি হয়ে মাঠ ছাড়েন সঞ্জু স্যামসন।

সঞ্জুর বিদায়ের কিছুক্ষণ পর প্যাভিলিয়নে ফেরেন সুরিয়াকুমারও। ব্যক্তিগত ৭৫ রানে মাহমুদউল্লাহর বলে রিশাদ হোসেনের তালুবন্দি হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। এরপর নতুন জুটি গড়েন পরাগ-পান্ডিয়া। এই দুজন মিলে গড়েন ৭০ রানের জুটি। হার্দিক পান্ডিয়া ও রিয়ান পরাগের ব্যাট থেকে আসে যথাক্রমে ৪৭ ও ৩৪ রান।

শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৯৭ রানে থামে ভারতের ইনিংস। বাংলাদেশের পক্ষে ৩টি উইকেট তুলে নেন তানজিম হাসান সাকিব। এছাড়া ১টি করে উইকেট পান মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ ও মাহমুদউল্লাহ।