<

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে শিল্প-সাহিত্যের বোঝাপড়া গুরুত্বপূর্ণ

যেকোনো আন্দোলন ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের মতো ঘটনার সঙ্গে শিল্পের সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ। তবে শিল্পমাধ্যমে তা প্রকাশ পেতে সময়ের প্রয়োজন হয়। সমন্বিত সচেতন শিল্প শুধু প্রতিক্রিয়া নয়, প্রতিকারের কথাও বলে। তাই জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার আন্দোলনের ঘটনা এবং এর পরবর্তী পরিবর্তন নিয়ে শিল্প ও সাহিত্য জরুরি।

‘বডি অ্যান্ড দ্য ম্যাপ’ বা ‘শরীর ও মানচিত্র’ শিরোনামে শুরু হওয়া প্রদর্শনীর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডির বেঙ্গল শিল্পালয়ে শুরু হয়েছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পটভূমিতে করা বিভিন্ন কাজ নিয়ে এই প্রদর্শনী।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম বলেন, এই প্রদর্শনী বিবিধতার শিল্প। এখানে প্রতীকী, ব্যঙ্গ-বিভিন্নভাবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে নতুন করে তুলে ধরার প্রয়াস রয়েছে। জুলাইয়ের অভ্যুত্থান কতটা গভীরে গিয়ে আঘাত করেছে, শিল্পের এই পুনর্নির্মাণ থেকে বোঝা যায়।

এ সময় আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘চিলেকোঠার সেপাই’ উপন্যাসের উদাহরণ টেনে ফিরদৌস আজিম আরও বলেন, আন্দোলন নিয়ে ‘মাস্টারপিস’ সাহিত্য তৈরি হতে হয়তো সময় লাগবে।

অনুষ্ঠানে শিল্প আলোচক ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক মুস্তাফা জামান বলেন, ইতর-ভদ্রের লড়াইয়ে জিতে যাওয়ার প্রকাশ দেখা যায় এ প্রদর্শনীতে। ছাত্র-জনতার লড়াইটাও এ কারণেই ছিল। আন্দোলনে পাহাড় থেকে সমতল, সব ধর্ম-গোত্রের মানুষ ছিল, তা মনে রাখতে হবে।

‘বডি অ্যান্ড দ্য ম্যাপ’ প্রদর্শনীটি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের একটি আলাপ বলে উল্লেখ করেন মুস্তাফা জামান। তিনি বলেন, শিল্প শুধু প্রতিক্রিয়া দিয়ে হয় না। প্রতিকারের মধ্য দিয়েও তাকে যেতে হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার সময় বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী বলেন, ছাত্র-জনতার এই আন্দোলনের সঙ্গে শিল্প-সাহিত্যের বোঝাপড়া গুরুত্বপূর্ণ।

প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে ১০ জন শিল্পীর কাজ। তাঁরা বলেন, আন্দোলনের সময় বিভিন্ন ঘটনায় তাঁদের মনে যে অভিঘাত তৈরি হয়েছিল, তারই প্রতিক্রিয়া এই শিল্পকর্মগুলো। সমাবেশ, হামলা, প্রাণহানি, ইন্টারনেট ব্ল্যাক আউটসহ নানা ঘটনা নিয়ে কাজ করেছেন তাঁরা।

বডি অ্যান্ড দ্য ম্যাপ প্রদর্শনী চলবে ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।