<

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের ১০০ দিন উপলক্ষে গান–কবিতা–আলোচনা

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের ১০০ দিন উপলক্ষে রাজধানীতে গান, কবিতা ও আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। এতে অংশ নেওয়া বক্তারা বলেছেন, আন্দোলনে যাঁরা নিহত ও আহত হয়েছেন, তাঁদের ত্যাগের বিনিময়ে দেশকে সুন্দর করতে হবে, রাষ্ট্রকে মানবিক করতে হবে। তার জন্য জরুরি গণতন্ত্র।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সম্মেলনকক্ষে এ আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়জী বলেন, ‘আন্দোলনে যাঁরা আহত হয়েছেন, চোখ হারিয়েছেন, জীবন হারিয়েছেন, তাঁদের ত্যাগের তুলনায় আমি খুবই নগণ্য। কিন্তু তাঁদের জীবনের বিনিময়ে দেশকে সুন্দর করতে হবে, রাষ্ট্রকে মানবিক করতে হবে। তার জন্য জরুরি গণতন্ত্র। একটা দেশ গণতন্ত্র ছাড়া বিকশিত হতে পারে না।’

সাংবাদিক ও গবেষক কাজল রশীদ বলেন, ‘অভ্যুত্থানে রিকশাচালকদের যে ভূমিকা, এখন কি আমরা তাঁদের জন্য ভালো থাকার ব্যবস্থা করছি? তাঁদের কতটুকু মনে রাখছি? এভাবে সব জায়গায় অভ্যুত্থানের শক্তি সঞ্চার ঘটেনি। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং একই সঙ্গে বেদনার।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী সাইয়েদ আবদুল্লাহ বলেন, ‘ইতিহাসকে নতুনভাবে জানার সুযোগ হয়েছে। নিষিদ্ধ বই উন্মুক্ত হয়েছে। প্রজন্মের কাছে সত্য লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। তার দায় রাজনীতির, শিক্ষক এবং রাষ্ট্রের। আজকের এই অনুষ্ঠান সারা দেশে হওয়া জরুরি। এমন আয়োজন ছড়িয়ে পড়লে মানুষের জাগরণ ঘটবে।’

শিল্পকলা ও বাংলা একাডেমির মতো প্রতিষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ দীর্ঘায়িত হয়েছে বলে অভিযোগ করেন কবি ও গবেষক ইমরান মাহফুজ। তিনি বলেন, ‘গণ–অভ্যুত্থানের আগে ও পরে কতটা পরিবর্তন হয়েছে, প্রতিদিনের পত্রিকা দেখলে তা বোঝা যায়। স্বৈরাচার সরকার যেভাবে নিয়োগ দিত, এই সরকার যদি সেভাবে চলে, তাহলে আমাদের লড়াই জারি রাখতে হবে। যথাযথ সংস্কার জরুরি। সামাজিক মূল্যবোধ, মর্যাদা ও সম্প্রীতির জন্য গণতন্ত্র ছাড়া উপায় নেই।’  

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মাশরুর শাকিল, লেখক সফিকুল ইসলাম, কবি মামুন সারওয়ার প্রমুখ বক্তব্য দেন। গান পরিবেশন করেন রিয়াজ শিমুল। কবিতা আবৃত্তি করেন আসিফ মাহামুদ, জিয়া হক, কাজী মারুফ, মিজান পঞ্চায়েতসহ আরও অনেকে। সমাপনী বক্তব্য দেন বিক্ষুব্ধ কবি-লেখক সমাজের আহ্বায়ক আবিদ আজম। তরুণ লেখক জুবায়ের ইবনে কামাল অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।