সাকিব আল হাসান, বিশ্ব ক্রিকেটের ব্র্যান্ড, বাংলাদেশ ক্রিকেটের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। নামের সাথে নাম্বার ওয়ান তকমা জড়িয়ে বাইশ গজের ক্রিকেট মাতিয়েছেন ইচ্ছে খুশি। স্বমহিমায় নিজেকে তুলে ধরেছেন অনন্য উচ্চতায়। তবে এর সবকিছুই কি এখন শুধুই অতীত?
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সাকিব আইসিসির টেস্ট প্লেয়ার অব দ্য ইয়ার-২০০৯ এবং একই বছর ক্রিকেটার অব দ্য ইয়ার এর জন্য মনোনয়ন পান। দ্য উইজডেন ক্রিকেটার্স সাকিবকে বছরের সেরা টেস্ট ক্রিকেটার নির্বাচিত করে। ওই ২০০৯ সালে আইসিসির ওয়ানডে অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ে ১ নম্বরে উঠে আসেন সাকিব। সবচেয়ে বেশি সময় ধরে এই তালিকার শীর্ষে থাকার রেকর্ডও গড়েন মিস্টার সেভেনটি ফাইভ।
এর দশ বছর পর এলো ২০১৯ বিশ্বকাপ। ইংল্যান্ডের সেই ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রায় ৮৭ গড়ে ৬০৬ রানের পাশাপাশি নেন ১১ উইকেট। বিশ্বকাপের মঞ্চে ব্যাটে বলে প্রথম এবং একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে এমন কীর্তি গড়েন এই সব্যসাচী। সাকিব তখন বাংলাদেশের জান, বাংলাদেশের প্রাণ। ক্রিকেটের যেকোনো ফরম্যাটের অলরাউন্ডার র্যাঙ্কিংয়ের তালিকায় তাকালে লাল সবুজের পতাকাটা অন্তত দেখা যেতো সাকিবের কল্যাণেই।
বদলেছে সময়, সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে যেমন বদলে গেছে ব্যাট-বলের ধার, তেমনি মাঠের বাইরের নানা সমালোচনার জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে মিলিয়ে যাচ্ছেন নাম্বার সেভেন্টি ফাইভ। এই যেমন আইসিসির র্যাঙ্কিংয়ে চোখ বোলাতেই ধরা দিলো বিস্ময়। আইসিসি ওডিআই র্যাঙ্কিংয়ের তালিকাতেই নেই সাকিবের নাম।
সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতি টানার ঘোষণার পর সাকিবের নামটা র্যাঙ্কিংয়ে থেকে সরিয়ে নেয় আইসিসি। মিরপুরে শেষ টেস্ট খেলার স্বপ্নভঙ্গ হওয়ার পর এই ফরম্যাটে তার অবসরের স্পষ্ট কোনো ঘোষণা এখনও পর্যন্ত আসেনি। আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত ওয়ানডে খেলার পরিকল্পনাতো ছিল সাকিবের। এরপরও তার নাম র্যাঙ্কিংয়ের তালিকা থেকে সরিয়ে নিয়েছে আইসিসি। অবসর না নেয়ার পরও কেন সাকিবের নাম সরিয়ে নিলো আইসিসি?
প্রশ্নের উত্তর, আইসিসি সাকিবের নামটা র্যাঙ্কিং থেকে সরিয়েছে নিয়ম মেনেই। কোনো নির্দিষ্ট ফরম্যাটে এক বছর ম্যাচ না খেললে আইসিসির চলমান র্যাঙ্ককিংয়ের তালিকা থেকে সরিয়ে ফেলা হয় নাম। একই ঘটনা ঘটেছে সাকিবের ক্ষেত্রেও। ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর ভারত বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার সাথে আলোচিত টাইমড আউটের সেই ম্যাচ। এরপর লাল সবুজের জার্সিতে আর ওয়ানডে ক্রিকেট খেলেননি সাকিব।
সাকিব অবশ্য একটি ম্যাচ খেললেই আবারও ঢুকে পড়বেন আইসিসির র্যাঙ্কিংয়ে। তবে রাজনৈতিক দোলাচলের পর দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তান আর উইন্ডিজ সিরিজেও দেখা নেই সাকিবের। তাই উঠছে আবারও সেই প্রশ্ন, সাকিবের গেছে যে দিন…একেবারেই কি গেছে?