<

সিন্ডিকেট বন্ধে বিকল্প কৃষিবাজার করা হবে: শ্রম উপদেষ্টা

শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, বাজার সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে সরকার বিকল্প কৃষিবাজার চালুর চিন্তা করছে। প্রচলিত বাজারের পাশাপাশি এই বাজার থাকবে এবং কৃষকেরা সেখানে সরাসরি পণ্য বিক্রি করবেন। এতে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ হবে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকার দক্ষিণ বেগুনবাড়িতে টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন শ্রম উপদেষ্টা। এ সময় বাণিজ্যসচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোস্তফা ইকবাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আজ থেকে ঢাকা মহানগরের ৫০টি ও চট্টগ্রাম মহানগরের ২০টি স্থানে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে এ বিক্রয় কার্যক্রম পরিচালনা করবে টিসিবি।

দেশে এক কোটি পরিবার কার্ডধারীর মধ্যে প্রতি মাসে কয়েকটি পণ্য বিক্রি করে আসছে সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এর পাশাপাশি সাধারণ ভোক্তাদের কাছে ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে তেল, ডাল ও চাল বিক্রি শুরু করেছে সংস্থাটি। এর ফলে পরিবার কার্ড না থাকলেও টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কেনার সুযোগ পাবেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আরও বলেন, সিন্ডিকেট ও মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে দাম বৃদ্ধি পায়। সে জন্য দীর্ঘ মেয়াদে সিন্ডিকেট ভাঙতে সম্ভাব্য সব উপায়ে কাজ করা হচ্ছে। বড় শহর থেকে স্থানীয় পর্যায় পর্যন্ত সরকারের টাস্কফোর্স কাজ করে যাচ্ছে। উৎপাদক বা কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যন্ত মধ্যস্বত্বভোগীদের স্তর কমিয়ে আনা জরুরি। এ ক্ষেত্রে যেসব বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উদ্যোক্তা থেকে গ্রাহকের কাছে পণ্য পৌঁছানোর সামাজিক ব্যবসা করছে, তারাও সরকারের সর্বোচ্চ সহযোগিতা পাবে।

বাণিজ্যসচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন বলেন, কেউ অতি মুনাফার উদ্দেশ্যে দাম বাড়ালে বা কৃত্রিম সংকট তৈরি করলে সরকার কঠোর অবস্থানে যাবে। সে জন্য সরকার আমদানি, উৎপাদন, পাইকারি কিংবা খুচরা—সব পর্যায়ে নজর রাখছে।

দেশে বর্তমানে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের উচ্চ দামের কারণে কষ্টে আছেন সাধারণ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে তাঁদের স্বস্তি দিতে সরকার খোলাবাজারে কৃষিপণ্য বিক্রিসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সাধারণ ভোক্তাদের জন্য টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে (ট্রাকে করে) পণ্য বিক্রির নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

টিসিবির ট্রাক থেকে একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ দুই লিটার ভোজ্যতেল (সয়াবিন বা কুঁড়ার তেল), পাঁচ কেজি চাল ও দুই কেজি মসুর ডাল কিনতে পারবেন। এর মধ্যে প্রতি লিটার ভোজ্যতেলের দাম রাখা হবে ১০০ টাকা। প্রতি কেজি চাল ৩০ টাকা ও মসুর ডাল ৬০ টাকা দরে বিক্রি করা হবে।

আজ সকালে তেজগাঁওয়ের বেগুনবাড়িতে টিসিবির ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধনের সময় দুই শতাধিক নারী-পুরুষ উপস্থিত ছিলেন, যাঁদের বেশির ভাগই নিম্নবিত্ত শ্রেণির। সেখানে পণ্য নিতে আসা গৃহকর্মী মায়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কম দামে কিছু জিনিস পেলে তো উপকার হয়। তবে কাজ ফেলে এত সময় লাইনে দাঁড়িয়ে পারা যায় না। সরকার বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমালেই বেশি উপকার হবে।