এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা এবং ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের যোদ্ধাদের লড়াইয়ে গাজার ‘অর্থনীতি পুরোপুরি বিধ্বস্ত’ হয়েছে। এ তথ্য জানিয়ে জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, এ উপত্যকার অর্থনীতি যুদ্ধপূর্বাবস্থায় ফিরতে লাগবে ৩৫০ বছর।
এ যুদ্ধে গাজার অর্থনৈতিক ক্ষতি বিষয়ে এক প্রতিবেদন তৈরি করেছে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন শাখা (আঙ্কটাড)। এ প্রতিবেদনেই বিশ্বসংস্থা ওই সতর্কবার্তা দিয়েছে।
জাতিসংঘ বলেছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার জের ধরে গাজায় দেশটির শুরু করা যুদ্ধে উপত্যকাটির অর্থনীতি ও অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে গেছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গত মাসে ওই প্রতিবেদন পেশ করা হয়। এতে বলা হয়, যুদ্ধ শুরুর আগে থেকেই গাজার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ছিল দুর্বল। সেখানে জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও পানির তীব্র ঘাটতি এবং উল্লেখযোগ্যভাবে প্রবেশাধিকার সীমাবদ্ধতার মধ্যে ন্যূনতম মানবিক স্বাস্থ্য ও খাদ্যসহায়তা চলমান ছিল। এর বাইরে এ উপত্যকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পুরোদমে ভেঙে পড়েছে।
জাতিসংঘ বলেছে, চলতি বছরের প্রথম চতুর্থাংশে (জানুয়ারি–মার্চ মাস) গাজার ৯৬ শতাংশ নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে গেছে, কৃষি উৎপাদন নেমে গেছে ৯৩ শতাংশ, সামগ্রিক উৎপাদন কমেছে ৯২ শতাংশ, সেবা খাতের উৎপাদন কমেছে ৭৬ শতাংশ। এ ছাড়া বেকারত্বের হার পৌঁছেছে ৮১ দশমিক ৭ শতাংশে। ইসরায়েলের সামরিক অভিযান চলতে থাকায় গাজার এ পরিস্থিতি এখনো বিদ্যমান আছে কিংবা আরও খারাপ হয়েছে বলে মনে করে জাতিসংঘ।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের ব্যাপক সেনা অভিযানে গাজায় নজিরবিহীন মানবিক, পরিবেশগত ও সামাজিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। উপত্যকাটির অর্থনীতি প্রাক্–উন্নয়ন অবস্থা থেকে একেবারে বিধ্বস্ত অবস্থায় উপনীত হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার পর যদি গাজা ২০০৭–২০২২ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারায় চলতে শুরু করে, সে ক্ষেত্রেও ২০২২ সালপূর্ব (যুদ্ধ–পূর্ব) জিডিপি পুনরুদ্ধার করতে উপত্যকাটির বাসিন্দাদের লাগবে ৩৫০ বছর।