<

ব্যাপকভাবে কমেছে বিলাসী সুইস ঘড়ির চাহিদা

সুইজারল্যান্ডের ঘড়ি রপ্তানি সেপ্টেম্বর মাসে ব্যাপকভাবে কমে গেছে। বড় ধরনের এই পতনের পেছনে মূল কারণ চীনে সুইস ঘড়ির চাহিদা কমে যাওয়া। দেশটিতে সেপ্টেম্বরে সুইস ঘড়ির আমদানি ৫০ শতাংশ কমেছে। সুইজারল্যান্ডের ঘড়ি শিল্প সমিতি জানিয়েছে, চলতি বছরে গত মাসেই ঘড়ি রপ্তানি সবচেয়ে বেশি কমেছে।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, চীনে সুইস ঘড়ির চাহিদা কমে যাওয়ার মানে হলো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এ দেশে সার্বিকভাবেই পণ্যের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। আর এর ফলে ইউরোপের বিলাসী পণ্য উৎপাদনকারীরা চাপে পড়ে গেছে।

ফেডারেশন অব সুইস ওয়াচ ইন্ডাস্ট্রি জানিয়েছে, হংকংয়েও সুইস ঘড়ির বিক্রি কমেছে। চীনের এই বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলে এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় গত সেপ্টেম্বরে ঘড়ির বিক্রি কমেছে ৩৪ দশমিক ৬ শতাংশ।

বিলাসী পণ্যের উৎপাদন খাতের পরিস্থিতি বুঝতে সুইস ঘড়ির রপ্তানি একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক। এ বিষয়ে যাঁরা খোঁজখবর রাখেন, তাঁরা সুইস ঘড়ি বিক্রি বাড়া–কমার দিকে গভীরভাবে নজর রাখেন।

সেপ্টেম্বরে ঘড়ি রপ্তানি করে সুইজারল্যান্ডের আয় হয়েছে ২১০ কোটি সুইস ফ্রাঁ, যা ২৫০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ। সার্বিকভাবে সুইস ঘড়ির রপ্তানি এই মাসে ১২ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। সুইস ঘড়ির বিক্রি সিঙ্গাপুরে কমেছে ১৩ দশমিক ৯ শতাংশ ও দক্ষিণ কোরিয়ায় কমেছে ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ।

অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে সুইস ঘড়ির বিক্রি কমেছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। তবে একমাত্র যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের বাজারে এই ঘড়ি আগের চেয়ে বেশি পরিমাণে বিক্রি হয়েছে। আমেরিকায় প্রবৃদ্ধির হার ছিল ২ দশমিক ৪ শতাংশ, আর জাপানে ২ শতাংশ।

বিশ্বব্যাপী রেকর্ড পরিমাণ সুইস ঘড়ি বিক্রি হয়েছিল ২০২৩ সালে। এরপর চলতি বছরের প্রথমার্ধে বিক্রি ২ দশমিক ৭ শতাংশ কমে যায়। চীনে আবাসন খাতে সংকট চলছে। পাশাপাশি তরুণদের মধ্যে বেকারত্বও বাড়ছে। ফলে দেশটিতে সুইস ঘড়ির মতো দামি একটি পণ্যের বিক্রিতে ভাটা পড়েছে।

চীন হলো সুইস ঘড়ির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাজার। ২০১৩ সালে দেশটি থেকে যত ঘড়ি রপ্তানি হয়েছে, তার ১০ শতাংশ গিয়েছিল চীনে।

তবে চীনের মানুষ সম্ভবত আরও সংখ্যায় সুইস ঘড়ি কিনে থাকে। চীনের ট্যুরিস্টরা যখন ইউরোপে ঘুরতে যান, তখন তাঁদের অনেকেই সুইস ঘড়ি কিনে থাকেন। এই হিসাব এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বিশেষ করে কোভিডের আগে বিপুলসংখ্যক চীনা পর্যটক ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বেড়াতে গিয়েছিলেন। মহামারির সময়ে লকডাউন দেওয়া হলে ইউরোপে চীনা ট্যুরিস্টের সংখ্যা কমে যায়।