<

কক্সবাজার সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন নিয়ে চার স্তরের নিরাপত্তাবলয়

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের লাবনী পয়েন্টে রোববার বিকেলে অনুষ্ঠিত হবে প্রতিমা বিসর্জন উৎসব। পর্যটকসহ প্রায় তিন লাখ মানুষের উপস্থিতিতে প্রতিমা বিসর্জন উৎসব নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসন চার স্তরের নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলনকক্ষে এক প্রস্তুতি সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সভায় সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, আনসার, গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দল ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বক্তব্য দেন সেনাবাহিনীর ৯ ইসিবি কক্সবাজারের অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর আহমেদ, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ, সিভিল সার্জন আসিফ আহমেদ হাওলাদার, জেলা বিএনপির সভাপতি শাহাজাহান চৌধুরী, জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) উদয় শংকর পাল, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) দীপক শর্মা প্রমুখ। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ সালাহ উদ্দিন।

জেলা প্রশাসক বলেন, দেশের বৃহত্তম প্রতিমা বিসর্জন উৎসব হয়ে থাকে কক্সবাজার সৈকতে। কয়েক লাখ মানুষের সমাগম ঘটে তাতে। এখন কক্সবাজার ভ্রমণ করছেন লাখো পর্যটক। সবার নজর থাকে কক্সবাজারের প্রতিমা বিসর্জন উৎসবের দিকে। তাই এখানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন করতে কঠোর নিরাপত্তা গ্রহণ করা হয়েছে। সৈকতের লাবনী পয়েন্টের উন্মুক্ত মঞ্চে দুপুরের পরপরই বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে আনা হবে প্রতিমা। আড়াইটা থেকে শুরু হবে বিজয়া সম্মেলন। বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত সাগরে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।

প্রতিমা বিসর্জন দিতে গিয়ে কেউ সাগরে ভেসে গেলে উদ্ধারের জন্য চট্টগ্রাম থেকে নৌবাহিনীর ডুবুরি দল আনা হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, ডুবুরি দলের লাইফ গার্ড কর্মীরাও উদ্ধার তৎপরতায় যুক্ত থাকবেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা চার স্তরের নিরাপত্তাবলয় তৈরি করবেন। পূজারি, আগত দর্শনার্থী ও পর্যটক মিলে অন্তত তিন লাখ মানুষের সমাগম আশা করা হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ দর্শনার্থীদের সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করবে একাধিক চিকিৎসা দল।

জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) উদয় শংকর পাল বলেন, ‘এবার জেলার ৯টি উপজেলায় ৩২১টি মণ্ডপে পূজা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৫১টি প্রতিমা ও ১৭০টি ঘটপূজা। রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে মন্ত্রপাঠের মাধ্যমে একযোগে সব প্রতিমা সাগরে বিসর্জন দেওয়া হবে। দেশের সর্ববৃহৎ সৈকতের প্রতিমা বিসর্জন উৎসব শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার মাধ্যমে এবারও আমরা প্রমাণ করতে চাই কক্সবাজার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য স্থান।’

ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, যানজট নিরসনে শহরের বাইরের উপজেলাগুলোর পূজামণ্ডপের প্রতিমা কলাতলী ডলফিন মোড় হয়ে এবং শহরের অভ্যন্তরের প্রতিমাগুলো প্রধান সড়কের হলিডে মোড় হয়ে সৈকতের লাবনী পয়েন্টের বিসর্জন অনুষ্ঠানস্থলে আসবে। প্রতিমাগুলো মণ্ডপ থেকে ট্রাকযোগে আনার সময় আনসার সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবেন। প্রতিমাবোঝাই ট্রাকবহরে যাতে অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য পুলিশের টহল দল তৎপর থাকবে। সৈকতের প্রবেশমুখ, প্রতিমা বহনের সড়ক ও মোড়ে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ সাদাপোশাকে লোকজনের নজরদারি বাড়ানো হয়।