গাজীপুরে কারখানার টিফিন খেয়ে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ: তদন্তের দাবি
গাজীপুরের টঙ্গীতে সিংবাড়ি মোড় এলাকায় বারাকা ফ্যাশন লিমিটেড নামক পোশাক কারখানার টিফিন খাওয়ার পর শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনায় কারখানা ও সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবাদানকারীদের মধ্যে চরম ব্যস্ততা এবং উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। প্রায় ১১ হাজার শ্রমিক ওভারটাইমে কাজ করছিলেন। রাত ৮টার দিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের জন্য টিফিন সরবরাহ করে। তবে, টিফিন খাওয়ার পরপরই শ্রমিকদের মধ্যে মাথা ব্যথা, বমি, পেটব্যথাসহ অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দেয়।
অসুস্থ শ্রমিকদের দ্রুত টঙ্গী সরকারি হাসপাতাল এবং গুটিয়া এলাকার ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় কারখানার ভেতরে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল।
বারাকা ফ্যাশন লিমিটেডের এক শ্রমিক জানান:
রাত ৯টার দিকে আমি ও আমার সঙ্গে আরও ১১ জন একসঙ্গে টিফিন খাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে মাথা ব্যথা শুরু হয় এবং বমি হতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে অচেতন হয়ে পড়ি। রাত ২টার দিকে আমি কিছুটা সুস্থ বোধ করি।
টঙ্গীর গুটিয়া ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. কাজী কাশফিয়া তাবাসসুম বলেন:
রাত ৩টা পর্যন্ত প্রায় দেড় শতাধিক রোগীর চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালে অতিরিক্ত ডাক্তার উপস্থিত থাকায় সবাই চিকিৎসা পাচ্ছেন। দেড় শতাধিক রোগীর মধ্যে তিনজন গর্ভবতী শ্রমিক রয়েছেন, যাদের জন্য বিশেষ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বারাকা ফ্যাশন লিমিটেড কারখানার মানব সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ বলেন:
শ্রমিকরা অসুস্থ হওয়ার পর কারখানার ভেতরেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক (টঙ্গী জোন) মো. ইসমাইল হোসেন জানান:
“অসুস্থ শ্রমিকদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অনেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। খাদ্যের গুণগত মান নিয়ে তদন্ত চলছে।”
এ ঘটনায় টিফিনের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শ্রমিকদের অভিযোগ, খাবারের মান নিম্নমানের হওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। খাদ্য নমুনা পরীক্ষা ও কারখানা কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম তদন্তের দাবি উঠেছে।
এ ধরনের ঘটনা শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য বড় একটি উদ্বেগের বিষয়। কারখানা কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো দোষীদের চিহ্নিত করতে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
-সায়মন ইসলয়াম