বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৮৯,২৩৫জন সরকারি কর্মকর্তার মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি প্রাপ্তদের তথ্য যাচাই করার উদ্যোগ

সংস্থাগুলিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি

বর্তমানে ৫৮টি মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর এবং এর অধীনস্থ সংস্থাগুলিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি প্রাপ্তদের কর্মরত সরকারি কর্মকর্তার সংখ্যা ৮৯,২৩৫

বর্তমানে ৫৮টি মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর এবং এর অধীনস্থ সংস্থাগুলিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মরত সরকারি কর্মকর্তার সংখ্যা ৮৯,২৩৫। ভুয়া সনদ ব্যবহার করে চাকরি নেয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে, এই তালিকার যাচাই-বাছাইয়ের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে। এরই মধ্যে ৫৮টি প্রতিষ্ঠান তাদের তথ্য জমা দিলেও, একটি প্রতিষ্ঠানের তথ্য এখনও অনুপস্থিত।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইসরাত চৌধুরীর মতে, যারা মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি করছেন, তাদের তথ্য যাচাই-বাছাই করতে একটি বিশেষ কমিটি কাজ করছে। এটি সম্পূর্ণ গোপনীয়তার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। স্বাধীনতার পর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাতে তাদের উত্তরাধিকারীদের সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার দিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা চালু করা হয়। তবে, বিভিন্ন সরকারের শাসনামলে এই কোটা পদ্ধতি নিয়ে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। অভিযোগ রয়েছে, অনেকেই প্রভাব খাটিয়ে বা ভুয়া সনদ ব্যবহার করে চাকরি পেয়েছেন। এমনকি এমন সনদও পাওয়া গেছে যেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স সঙ্গতিহীন।

২০২৪ সালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাধ্যমে কোটা সংস্কারের দাবি জোরালো হয়। আন্দোলনের চাপে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের মধ্যে অন্যতম ছিল মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি প্রাপ্তদের তথ্য যাচাই করার উদ্যোগ। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যের মধ্যে কর্মরতদের নাম, চাকরির গ্রেড, মুক্তিযোদ্ধার সনদ নম্বর, এবং পরিবারের অন্যান্য তথ্য অন্তর্ভুক্ত। এই যাচাইয়ের মাধ্যমে ভুয়া সনদধারীদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা সংরক্ষণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ২৯,৪৮৫ জন, জননিরাপত্তা বিভাগ ও বাংলাদেশ পুলিশে ২৩,০৬৩ জন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে ৪,৮৩৫ জন, বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয়ে ৭,৪০৭ জন, সুরক্ষা সেবা বিভাগে ২,১০১ জন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে ৬১৭ জন এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ে ১,৮৫২ জন মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি করছেন।

অনেক রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবশালী ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন। এ অবস্থায় মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা ও জাতীয় ভাবমূর্তি সংরক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যাচাই-বাছাই শেষে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি কোটা ব্যবস্থার নতুন কাঠামো তৈরির পরিকল্পনা করা হবে।

-সায়মন ইসলাম

guest
0 মতামত সমুহ
Inline Feedbacks
View all comments