বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রথমে কানাডা, তারপর পানামা খাল গ্রিনল্যান্ড: এক আকাঙ্ক্ষিত ভূখণ্ড

প্রথমে কানাডা, তারপর পানামা খাল গ্রিনল্যান্ড: এক আকাঙ্ক্ষিত ভূখণ্ড

গ্রিনল্যান্ড: এক আকাঙ্ক্ষিত ভূখণ্ড

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও আন্তর্জাতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। প্রথমে কানাডা, তারপর পানামা খাল, আর এখন গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করে আলোচনার ঝড় তুলেছেন তিনি। সম্প্রতি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ গ্রিনল্যান্ড নিয়ে নিজের ইচ্ছার কথা তুলে ধরেছেন ট্রাম্প। তবে গ্রিনল্যান্ড তার প্রস্তাব সাফ খারিজ করে দিয়েছে। এ তথ্য প্রকাশ করেছে সংবাদ সংস্থা এপি বুধবার (২৫ ডিসেম্বর)।

গ্রিনল্যান্ড: এক আকাঙ্ক্ষিত ভূখণ্ড। উত্তর আমেরিকা মহাদেশের অন্তর্গত হলেও গ্রিনল্যান্ড মূলত ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল। এটি প্রাকৃতিক সম্পদ এবং ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্পের দাবি, “গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ সারাবিশ্বের নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যাবশ্যক।”

ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পরপরই গ্রিনল্যান্ড সরকার সাফ জানিয়ে দিয়েছে যে, তারা বিক্রি হওয়ার কোনো পরিকল্পনা করছে না। এ প্রসঙ্গে গ্রিনল্যান্ডের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “আমরা স্বশাসিত, এবং আমাদের ভবিষ্যত আমাদের হাতেই থাকবে।”

ট্রাম্পের আগ্রহ নতুন নয়

গ্রিনল্যান্ড নিয়ে ট্রাম্পের আগ্রহ আজকের নয়। ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে তিনি গ্রিনল্যান্ড কিনতে চেয়েছিলেন। ২০১৯ সালে তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছিলেন, প্রাকৃতিক সম্পদ ও ভূ-রাজনৈতিক কারণে গ্রিনল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন তখনই তার প্রস্তাবকে ‘অযৌক্তিক’ বলে নাকচ করেছিলেন।

পানামা খালের দখল নিয়ে বিতর্ক

গ্রিনল্যান্ডের পাশাপাশি ট্রাম্প পানামা খাল নিয়েও বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। সম্প্রতি তিনি পানামা খাল দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজ পারাপারের সময় নেওয়া ‘অন্যায্য’ ফি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এমনকি তিনি খালটির দখল পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ফিরিয়ে আনার হুমকিও দিয়েছেন।

১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মাণ করা পানামা খালটি ১৯৯৯ সালে একটি চুক্তির আওতায় পানামার হাতে হস্তান্তর করা হয়। তবে ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “পানামা খাল এবং এর আশপাশের প্রতিটি ইঞ্চি পানামারই, এবং সেটি চিরকাল পানামারই থাকবে।”

বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া

ট্রাম্পের এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই একে তার আগ্রাসী নীতি হিসেবে দেখছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গ্রিনল্যান্ড ও পানামা খালের প্রতি ট্রাম্পের আগ্রহ তার কৌশলগত পরিকল্পনারই অংশ, যা ভবিষ্যতে বড় ধরনের আন্তর্জাতিক সংঘাতের কারণ হতে পারে।

ট্রাম্পের এমন অবস্থান বিশ্ব রাজনীতির জন্য কতটা প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে।

guest
0 মতামত সমুহ
Inline Feedbacks
View all comments