পাকিস্তানের বিরোধীদলীয় নেতা ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে উত্তাল দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদ। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করেই ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতাদের নেতৃত্বে ইসলামাবাদ শহরের কেন্দ্রস্থল ডি-চক পৌঁছে গেছে পিটিআইয়ের হাজারও বিক্ষোভকারী। এরইমধ্যে সেই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ছে। সংঘর্ষে ইতোমধ্যে ছয়জনের নিহতের খবর পাওয়া গেছে।
দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছ, ইমরান খানের মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগের দাবিতে ব্যারিকেড ভেঙে ইসলামাবাদে প্রবেশ করেছে পিটিআইয়ের সমর্থকেরা। মঙ্গলবার সকালেই রাজধানীর চারপাশে স্থাপিত ব্যারিকেড ভেঙে ইসলামাবাদে প্রবেশ করেন তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নিরাপত্তা বাহিনী নামানো হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৪ হাজারের বেশি পিটিআই সমর্থককে।
ডি-চক হলো ইসলামাবাদের অত্যন্ত সুরক্ষিত রেড জোনের একটি গোলচত্বর। দীর্ঘদিন ধরে এই চত্বর রাজনৈতিক প্রতিবাদের অন্যতম স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই এলাকায় পার্লামেন্ট হাউস, সুপ্রিম কোর্ট, সচিবালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন রয়েছে।
দেশটির সংবাদমাধ্যম জিও টিভি জানিয়েছে– পিটিআই সামাজিকমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে জানিয়েছে, পুলিশের গুলিতে তিনজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। মুলতান, রাজানপুর, গুজরাট, দেরা গাজি খানসহ পাঞ্জাবের বেশ কয়েকটি শহরে ইন্টারনেটসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
ইসলামাবাদ অভিমুখী জনস্রোতে অংশ নিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি। একটি সূত্র জানিয়েছে, বিক্ষোভস্থল বদলাতে বুশরা বিবির সঙ্গে বারবার বৈঠক করেছেন দেশটির খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও পিটিআই নেতা আলী আমিন গান্দাপুর ও ওমর আইয়ুব। কিন্তু আশার শিকে ছেড়েনি, বুশরা রাজি হননি।
অনড় বুশরা জানিয়ে দিয়েছেন, সরকারের বাধা সত্ত্বেও পূর্বঘোষণা অনুযায়ী তিনি ইসলামাবাদের সুরক্ষিত ডি-চক এলাকাতেই বিক্ষোভ করতে চান।
এর আগে বুশরা বিবি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন– যতোক্ষণ না ইমরান খান বাইরে এসে আমাদের থামতে না বলেন, যতো চাপই আসুক ততোক্ষণ আমরা থামবো না। ডি-চক পৌঁছে ইমরান খানের পরবর্তী পদক্ষেপ জানানো হবে। সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে, বিক্ষোভ কর্মসূচির জেরে পাকিস্তান জুড়ে ব্যাহত হচ্ছে বিমান চলাচল। পাকিস্তানের বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পিটিআইয়ের নেতাদের সঙ্গে সরকার কয়েক দফায় আলোচনা চালাচ্ছে।