জলবায়ু অভিঘাত মোকাবেলায় খাপ খাইয়ে নেয়া বা অভিযোজন খাতে সক্ষমতা বৃদ্ধি বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর অন্যতম কার্যক্রম। কিন্তু প্রতি বছর জলবায়ু অভিঘাত মোকাবেলায় কমছে জলবায়ু অভিযোজন খাতে অর্থায়ন। এবারের জলবায়ু সম্মেলনও এর ব্যতিক্রম নয়। এ বছর জলবায়ু সম্মেলনে ৩০০ মিলিয়ন ডলার অর্থ প্রত্যাশা করা হলেও মিলেছে কেবল ১৩৩ মিলিয়ন।
বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন জলবায়ু অ্যাডাপটেশন ফান্ডের প্রধান মিকো অলিকায়নেন। যমুনা টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এই খাতে অর্থায়ন বৃদ্ধি করা গেলে লাভবান হতে পারতো বাংলাদেশের মতো দেশগুলো।
মিকো অলিকায়নেন বলেন, আমরা সবাই জানি অভিযোজন খাত কত গুরুত্বপুর্ণ; কিন্তু সেখানে অর্থায়নে মনযোগ হারাচ্ছে বিশ্ব। এ বছর দরকার ছিল ৩০০ মিলিয়ন ইউএস ডলার, কিন্তু মিলেছে অর্ধেকেরও কম। এই খাতের কার্যক্রম যে এখনও চলছে এটাই বিস্ময়কর। উন্নত দেশগুলোর অর্থায়নে স্বেচ্ছায় সহায়তা করার কথা, কিন্তু তারা অনেকটাই দেখেও না দেখার ভান করছেন।
আজারবাইজানের বাকুতে যমুনা টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, এটা এক-দুই দিনের চ্যালেঞ্জ নয়, কয়েক দশকের চ্যালেঞ্জ। তারা একটা ইতিবাচক ভবিষ্যৎ নিশ্চিতের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য।
মিকো অলিকায়নেন বললেন, এ বছর নিউ কালেক্টিভ কোয়ান্টিফায়েড গোল, অ্যাডাপটেশন ফান্ড ও অর্থায়ন বিন্যস্ত একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে মনে রাখতে হবে এটা এক বছরের চ্যালেঞ্জ নয়। কয়েক দশকের চ্যালেঞ্জ। আমরা ক্রমাগত চেষ্টা চালাচ্ছি, একটা ইতিবাচক ভবিষ্যতের জন্য। বলটা এখন উন্নত দেশগুলোর কোর্টে। আমরা যদি ছেড়ে দেই তাহলে কিছুই পাবো না।
সম্মেলনের সমঝোতায় বিভিন্ন দেশ ও রাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাগুলো বিভিন্ন রকমের দাবি তুলে। অভিযোজন খাতে আর্থিক ঘাটতির কথা উন্নত দেশগুলোরও জানা আছে, তবুও তারা বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি করছে।
এ নিয়ে জলবায়ু অ্যাডাপটেশন ফান্ডের প্রধান বলেন, আমরা মিলিয়ন, বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন নিয়ে আলোচনা করতে পারি। কিন্তু আমি বলব, গ্রান্ট বেইজড ফান্ড আরও বাড়ানো দরকার। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য সহায়তা বৃদ্ধির জন্য।
এখনও আশা ছাড়ছেন না মিকো অলিকায়নেন। বলছেন, হতাশা থাকতেই পারে। তবে আগামী সম্মেলনে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উন্নত দেশগুলো আরও অর্থ সহায়তা বাড়াবে বলেই প্রত্যাশা তার।