এবারের জলবায়ু সম্মেলনের শেষ দিনের আলোচনায় উঠে আসে অর্থের দর কষাকষি। ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রতিনিধি হিসেবে বাংলাদেশ তহবিলের দিকে তাকিয়ে। এবারের সম্মেলন একটা অংশের জন্য হতাশার হলেও টাকার অঙ্ক ঘিরে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে যেন ঐক্যটা ভেঙে না যায় এবং কপের প্রক্রিয়া চালিয়ে রাখা জরুরি বলে অভিমত পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের।
যমুনা নিউজকে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এবার বিরোধীপক্ষ অনেক বেশি। স্বল্পোন্নত দেশ, খুদে দ্বীপরাষ্ট্র ও চীন যদি ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারি, সেটাই কপ-টোয়েন্টি নাইনের বড় অর্জন। কত টাকা পেলাম, তা জরুরি না। কারণ, দেশের এক-তৃতীয়াংশ ভূমি যদি পানিতে তলিয়ে যায়, সেটি উদ্ধারে কত টাকা যথেষ্ট হবে? কার্বন নিঃসরণ, মিটিগেশন ও জীবাশ্ব জ্বালানির ব্যবহার কমাতে আমাদের ক্রমাগত চাপ প্রয়োগ করতে হবে। সেদিক থেকে এবারের সম্মেলন হতাশা ও উদ্বেগের।
এবারের সম্মেলন থেকে যে পরিমাণ তহবিল দরকার সে পরিমাণ অর্থ পাওয়া যাবে না, সেটা নিশ্চিত। তাছাড়া, ফাইনান্সিয়াল কপ বলা হলেও এবার যুক্তরাষ্ট্রের ছিল ভিন্ন বাস্তবতা। ইউরোপ ও অন্যান্য দেশের রাজনৈতিক দৃশ্যপটেও আসছে পরিবর্তন। ফলে এবার অর্থমানের দিকটা জয়ী হতে পারলেই স্বার্থকতা।
এ নিয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা বলছিলেন, জলবায়ু ইস্যুতে দেরি করার সুযোগ নেই। তহবিলের কথা যদি ওঠে, তাহলে বলবো, এই সম্মেলনেও কাঙ্খিত পরিমাণ অর্থ পাওয়া যাবে না। এবার গুরুত্বারোপ করতে হবে মানের ওপর। অর্থটা কি ঋণ হিসেবে নাকি কার্বন কারেটিংয়ের মাধ্যমে আসবে? অর্থমানের ব্যাপারে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারলে, বাংলাদেশের জন্য জয় ধরে নেবো।
তবে অর্থ সহায়তা ঋণ নাকি অনুদান হিসেবে পাবে উন্নয়নশীল দেশগুলো, সেটি নিয়েও আছে নানা সমীকরণ।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, যত তহবিল আসবে, তার অর্ধেক বন্যাদুগর্তদের জন্য ব্যয় হবে। এই জায়গায় জয়ী হলেই, সেটা আশার জায়গা। দ্বিতীয় বিষয়টি হলো, সম্মেলনটি বাঁচিয়ে রাখতে হবে। প্রক্রিয়াটি বছরে একবার না দু’বার হবে, কী পরিসরে হবে— সেটা নিয়েও ভাবতে হবে। কারণ, ছাড় দেয়া যাবে না।
কপে বিভিন্ন স্বার্থ রিপ্রেজেন্ট করে এমন ব্লক অনেক আছে। ফলে, নিজেদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখা জরুরি, এমন অভিমত সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের।