নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে বেশ কিছু পরিবর্তনের সুপারিশ করতে যাচ্ছে কমিশন। কী কী থাকছে সেই সংস্কারে? এ নিয়ে যমুনা টেলিভিশন কথা বলেছে, কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদের সাথে।
শুরুতেই ড. তোফায়েল জানান, যেসব বিষয়ে সংস্কারের পরিকল্পনা হচ্ছে, তা কাজে দেবে দীর্ঘ মেয়াদে নির্বাচন প্রক্রিয়ায়। যেখানে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে এক ছকে। মেয়র নির্বাচন করতে প্রয়োজন হবে না, নাগরিকের সরাসরি ভোট। এক শিডিউলে হয়ে যাবে মেয়র থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের স্থানীয় সরকারের ভোটগ্রহণ। তার দাবি, এতে খরচ যেমন কমবে, তেমনি সহজ হবে নির্বাচন প্রক্রিয়া।
ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো একটি কাঠামোতে নিয়ে আসা হবে। একসঙ্গে নির্বাচন হবে। জনগণ ইউনিয়ন পর্যায়ে ভোট দেবে। নির্বাচিতদের ভোটে মেয়রসহ ওপরের অন্যান্য পদে নির্বাচন হবে। তারা সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবেন না। এছাড়া, সংসদ নির্বাচনের পরপরই একযোগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়ে যাবে। এতে করে নতুন সরকার বা দলীয় সরকার এলেও কোনো এলাকা উন্নয়নে বৈষম্যের শিকার হবে না।
সংস্কারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে, প্রবাসীদের ভোটদানের প্রক্রিয়ায়। পোস্টাল ব্যবস্থায় ভোট দিতে পারবেন প্রবাসীরা। একইসাথে সাংবিধানিক অধিকার চর্চায় ভোটদানের সুযোগ দেয়া হবে জেলখানার কয়েদিদেরও।
এ নিয়ে ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, প্রবাসীদের সাংবিধানিক অধিকার এতো খর্ব হয়ে আসছে। এখন চ্যালেঞ্জ থাকবে তাদেরকে ভোটাধিকারের আওতায় আনা। এজন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা লাগবে। পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেবেন না অনলাইনে দেবেন সেটির জন্য এই মন্ত্রণালয়গুলো সহযোগিতা করবে। এছাড়া কারাগারে থাকা নাগরিকদের ভোটাধিকার কিন্তু সাংবিধানিকভাবে রয়েছে। কাজেই তাদেরকেও ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দিতে হবে।
এছাড়া কমিশন সুপারিশ করবে, নির্ভুল ভোটার তালিকা নিশ্চিতের প্রক্রিয়ায়। ১৭ বছর বয়সে পাওয়া যাবে জাতীয় পরিচয়পত্র, ১৮ বছর হলেই সয়ংক্রিয়ভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে ভোটার তালিকায়।
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ড. তোফায়েল আহমেদ বিষয়টি নিয়ে বলেন, ১৭ বছর হলে নাগরিকরা জাতীয় পরিচয়পত্র পাবে। ১৮ বছর হলে যেন, স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার হয়ে যান। সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এরপর যারা মারা গেছেন তাদেরকে ভোটার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের কাজ সংবিধানের আলোকে, তাই সংবিধান সংস্কার কমিটিকে আমরা এসব সুপারিশ করবো।
বিগত নির্বাচনগুলোর ত্রুটি-বিচ্যুতিও তুলে ধরবে কমিশন। এসব পরামর্শ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের দায়িত্ব সরকারের। অন্তর্বর্তী সরকার এসব সুপারিশ গ্রহণ করলে পরবর্তী নির্বাচন কমিশন তা বাস্তবায়ন করবে।