<

লোকালয়ে হাতির আক্রমণ ঠেকাতে পারে মৌমাছির চাক

মাঝেমধ্যেই বন্য হাতি লোকালয়ে চলে আসে। অনেক সময় বন্য হাতির তাণ্ডবে মৃত্যুর মুখে পড়ে মানুষ। সাধারণত ক্ষুধার তাড়নায় ফসল খেতে প্রবেশ করে একা বা দলগতভাবে মানুষকে আক্রমণ করে থাকে হাতি। ‘কনজারভেশন সায়েন্স অ্যান্ড প্র্যাকটিস’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লোকালয়ে হাতি আসা ঠেকাতে মৌমাছি প্রাকৃতিকভাবে বেশ কার্যকর। কেনিয়ার ছোট ছোট খামারের চারপাশে যেখানে মৌমাছির চাক ছিল, সেখানে ফসলের মৌসুমে হাতির আনাগোনা কম হয়েছে। মৌমাছির উপস্থিতির কারণে ৮৬ শতাংশের বেশিবার হাতিকে প্রাকৃতিকভাবে লোকালয় থেকে তাড়ানো গেছে।

গবেষণার তথ্যমতে, মানুষের কারণে হাতির আবাসস্থল সংকুচিত হচ্ছে। আবার শিকারিদের আক্রমণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে হাতির লোকালয়ে আক্রমণ বাড়ছে। সেই আক্রমণ কমাতে কেনিয়ার স্থানীয় খামারি ও কৃষকেরা মৌমাছিকে প্রাকৃতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। ৯ বছর ধরে পরিচালিত এ গবেষণায় কেনিয়া ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস ও সেভ দ্য এলিফ্যান্টস নামের দাতব্য সংস্থা, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা যুক্ত ছিলেন।

কেনিয়ার বন্য প্রাণী গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্যাট্রিক ওমন্ডি বলেন, মানুষ ও হাতির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা কেনিয়ায় বাড়ছে। ক্রমবর্ধমান এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মৌচাকের উপস্থিতি বেশ কার্যকর। আশপাশে মৌচাক থাকলে শ্রবণ ও ঘ্রাণশক্তির মাধ্যমে টের পায় হাতি। ফলে মৌমাছির কামড়ের ভয়ে হাতিরা কৃষিজমি থেকে দূরে থাকে। অন্যদিকে স্থানীয় কৃষকেরা মৌচাক থেকে মধু ও মোম উৎপাদনের মাধ্যমে ফসলের পরাগায়ন ও আয়ের সুযোগ পাচ্ছে।

গবেষকেরা দক্ষিণ-পূর্ব কেনিয়ার সাভো ইস্ট ন্যাশনাল পার্কের কাছে দুটি গ্রামে মৌচাকে সুরক্ষিত ২৬টি খামার পর্যবেক্ষণ করেছেন। সেখানে তাঁরা হাতির আক্রমণের চার হাজার ঘটনা বিশ্লেষণ করেছেন। গবেষকেরা দেখেন, হাতিরা সারা বছর উদ্যানের অভ্যন্তরে ও বাইরে অবাধে বিচরণ করলেও সঙ্গী, খাদ্য ও পানির সন্ধানে লোকালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়।