<

খাবারের হোটেল দখল করে টাঙানো বিএনপি কার্যালয়ের সেই সাইনবোর্ড উধাও

জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মাত্রাই বাজারের এক ব্যক্তির টিনশেডের খাবারের হোটেল দখল করে টাঙানো মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের দলীয় কার্যালয়ের সেই সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সাইনবোর্ডটি সরিয়ে ফেলা হয় বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন।

তবে খাবার হোটেলের মালিক ঘরটি এখনো বুঝে পাননি। বিএনপির নেতারা এখন তালাবন্ধ করে রেখেছেন।

মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদুল ইসলাম ও ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সাজ্জাদুল ইসলাম খাবার হোটেলটি দখল করে মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা সাইনবোর্ড দিয়েছিলেন। এ ঘটনায় হোটেলের মালিক মো. রেজাউল করিম তালুকদার ওরফে নাজু তাঁদের দুজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। এ নিয়ে মঙ্গলবার প্রথম আলোয় ‘খাবারের হোটেল দখল করে বিএনপির কার্যালয়’ শিরোনামে একটি সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা সমালোচনার মুখে পড়েন। রাতের বেলায় সাইনবোর্ডটি সরিয়ে নেওয়া হয়।

খাবার হোটেলের মালিক রেজাউল থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, তিনি ৪০ বছর ধরে মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের পাশে টিনশেডে খাবার হোটেলের ব্যবসা করছেন। দেশের চলমান পরিস্থিতির সুযোগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বিএনপি নেতা জাহিদুল ও সাজ্জাদুল হোটেলে এসে তাঁর কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। তাঁদের চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। বিএনপি নেতা জাহিদুল তাৎক্ষণিকভাবে হোটেলমালিক রেজাউলকে জোর করে তাঁর হোটেল থেকে বের করে দেন। তাঁরা হোটেলে তালা ঝুলিয়ে রেজাউলকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সেখান থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। হোটেলের ভেতর রেফ্রিজারেটর, চেয়ার-টেবিল, ফ্যানসহ আনুমানিক দেড় লাখ টাকার মালামাল রয়েছে। এসব আসবাবসহ হোটেল জবরদখল করেছেন তাঁরা।

মাত্রাই বাজারের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলবার রাতে রেজাউলের হোটেলে লাগানো বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড টাঙানো ছিল। যাঁরা সাইনবোর্ড লাগিয়ে ছিলেন, তাঁরা রাতের বেলায় সাইনবোর্ড সরিয়ে নিয়েছেন।

খাবার হোটেলের মালিক রেজাউল করিম বলেন, ‘আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। আমার বয়স এখন সত্তরের কাছাকাছি। নিজেও শারীরিকভাবে অনেকটা অসুস্থ। হঠাৎ করেই বিএনপি নেতা জাহিদুল আমার হোটেল জবরদখল করে হোটেলে মাত্রাই ইউনিয়ন বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড টাঙিয়েছিলেন। মঙ্গলবার প্রথম আলোয় খবর প্রকাশিত হওয়ার পর রাতে খাবারের হোটেলে লাগানো দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলেছেন বিএনপির লোকজনেরা। তবে তাঁরা এখনো আমার খাবার হোটেলের তালা খুলে দেননি।’

তবে জাহিদুল ইসলাম আজ বুধবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার এক আত্মীয় অসুস্থ। আমি দুই দিন থেকে সেখানে রয়েছি। খাবার হোটেলের লাগানো সাইনবোর্ড কে খুলে নিয়েছে, সেটি জানি না।’