বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নারীদের প্রতি আট জনের একজন স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকিতে রয়েছেন। আর বাংলাদেশে প্রতিবছর স্তন ক্যান্সারে প্রায় ১৩ হাজার নারী আক্রান্ত হচ্ছেন। যাদের মধ্যে মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ প্রাথমিক পর্যায়ে আক্রান্ত হওয়ার কথা জানতে পারেন। আক্রান্ত হয়ে বছরে মারা যাচ্ছেন সাত হাজারেরও বেশি।
শুক্রবার কুমিল্লা নগরীর গোমতী হাসপাতালের মিলনায়তনে ‘স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধে নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের গুরুত্ব’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। আলোচনা সভার সহযোগিতায় ছিল নারী উদ্যোগ কেন্দ্রের উইমেন্স ক্যান্সার কন্ট্রোল প্রোগ্রাম।
সভায় বিশেষজ্ঞরা বলেন, যে সব নারী সন্তানকে বুকের দুধ পান করান না, কিংবা নিঃসন্তান, তারা এই ক্যান্সারের ঝুঁকিতে বেশি থাকেন। ৩৫ বছরের বেশি বয়সের নারীদের প্রতি বছর একবার স্তন পরীক্ষা করানো প্রয়োজন। এতে সমস্যা প্রথমদিকে শনাক্ত হলে তা নিরূপণ সহজ হয়। তাই লজ্জা না করে চিকিৎসা নিতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, নারীরা সময় মতো চিকিৎসা না করানোয় এটি বাড়ছে। দেখা যায়, ছয় মাস ধরে তিনি বুঝতে পারছেন চাকা হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসকের কাছে আসেননি। সারা বিশ্বে ৪৫-৫৫ বছর হচ্ছে স্তন ক্যান্সারের পিক টাইম। আর বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ৩৫ থেকে ৪৫ বছরেই ক্যান্সার হচ্ছে। অর্থাৎ, ১০ বছর আগেই তারা ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে। আমরা ২০-২২ বছরের মেয়েদেরও স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে দেখেছি।
ক্যান্সার নিয়ে আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা গ্লোবোক্যানের তথ্য মতে, প্রতি বছর বাংলাদেশে প্রায় ১৩ হাজার মানুষ স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন, যার ৯০ শতাংশই নারী। আর এর মধ্যে মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ রোগী স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আসেন। স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসা না হওয়ার পেছনে দুটি কারণকে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। সেটি হলো- বাড়ির কাজে সময় পাননি এবং বুঝতে পারেননি।
সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন- ব্রেস্ট সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. আবু বকর সিদ্দিক ফয়সাল। বক্তব্য রাখেন, উইমেন্স ক্যান্সার কন্ট্রোল প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী রাশেদা আখতার, ব্লাস্ট কুমিল্লার সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট শামীমা আক্তার জাহান, বিজয়পুর মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাছিমা আকাতার পুতুল, মাঝিগাছা আক্তারুজ্জামান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাহিদা সুলতানা, সংগঠক মিয়া মোহাম্মদ তৌফিক ও ডা. ইরফান আলম মিশু।