এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল আগামীকাল মঙ্গলবার ঘোষণা করা হবে। বেলা ১১টায় স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান থেকে এবং অনলাইনে একযোগে ফল প্রকাশিত হবে। অন্যান্য সময়ে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে ফল প্রকাশের কার্যক্রম উদ্বোধন করতেন। তবে এবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা তা করছেন না। স্ব স্ব শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানেরাই ফল প্রকাশ করবেন বলে জানা গেছে।
এবার এইচএসসি বা সমমানের মোট পরীক্ষার্থী ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন। সাত বিষয়ে নম্বরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করা হলেও ১৩ বিষয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল তৈরি করা হয়েছে। অর্থাৎ ১৩ বিষয়ে ‘অটো পাশ’ দেওয়া হয়েছে। তারপরও শতভাগ সাফল্য আসেনি ফলাফলে বরং কপাল পুড়ল লাখো শিক্ষার্থীর। কারণ ৯টি সাধারণ বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোতে এবার অনুপস্থিত ছিলেন ৯৬ হাজার ৯৯৭ জন। আর বহিষ্কার হন ২৯৭ জন।
নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষায় অনুপস্থিত থাকলে কিংবা বহিষ্কার হলে সামগ্রিক ফলাফল অকৃতকার্য আসে। পরীক্ষার মাধ্যমে যে সাতটি বিষয়ের ফলাফল তৈরি করা হয়েছে, সেখানে কতজন ফেল করেছেন, সেটা জানা যাবে আগামীকাল।
২০২৩ সালে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ করেছিলেন ১৩ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থী। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ১৩ লাখ ৫৭ হাজার ৯১৫ জন পরীক্ষার্থী। আর পাশ করেন ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৮৫২ জন পরীক্ষার্থী। সেই হিসেবে ৩ লাখ ৭ হাজার ৭২৩ জন পরীক্ষার্থী ফেল করেন। তাদের মধ্যে ১৭ হাজার ৬৬০ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফরম পূরণ করলেও পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে ফেল করেন। আর ২ লাখ ৯০ হাজার ৬৩ জন পরীক্ষার্থী এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাশ করতে পারেননি।
গত ৩০ জুন থেকে সারা দেশে একযোগে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতার কারণে গত ১৮, ২১, ২৩ ও ২৫, ২৮ জুলাই, ১ ও ৪ আগস্টের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। সবশেষে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন সূচিতে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নতুন করে আর পরীক্ষা না নিয়ে যেগুলো হয়েছে সেগুলোর ওপর ভিত্তি করে এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের দাবি নিয়ে শত শত পরীক্ষার্থী নজিরবিহীনভাবে ২০ আগস্ট দুপুরে প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়ে ঢুকে পড়ে।
পরে তাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে বসে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অবশিষ্ট পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সিদ্ধান্ত হয়, এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে (বিষয় ম্যাপিং) হবে মাঝপথে বাতিল করা এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফল। ইতিমধ্যে যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়ে গেছে, সেগুলোর উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে। আর যেসব বিষয়ের পরীক্ষা হয়নি, সেগুলোর ফলাফল প্রকাশ করা হবে এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বিষয় ম্যাপিং করে।
বিষয় ম্যাপিংয়ের জন্য একটি নীতিমালা আছে। এ প্রক্রিয়ায় একজন পরীক্ষার্থী এসএসসিতে একটি বিষয়ে যত নম্বর পেয়েছিল, এইচএসসিতে সেই বিষয় থাকলে তাতে এসএসসিতে প্রাপ্ত পুরো নম্বর বিবেচনায় নেওয়া হবে। আর এসএসসি ও এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষার বিষয়ে ভিন্নতা থাকলে বিষয় ম্যাপিংয়ের নীতিমালা অনুযায়ী নম্বর বিবেচনা করে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
যেভাবে ফলাফল জানা যাবেঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এক বিজ্ঞপ্তিতে কীভাবে শিক্ষার্থীরা ফলাফল পাবেন, তা জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করা যাবে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট www.dhakaeducationboard.gov.bd, educationboardresults.gov.bd www. eduboardresults.gov.bd- এ Result কর্নারে ক্লিক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের EIIN এন্ট্রি করে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক Result sheet download করা যাবে এবং রোল ও রেজিস্ট্রেশন নম্বরের মাধ্যমে রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করতে পারবেন।
পরীক্ষার্থীরা এসএমএসের মাধ্যমে প্রাক নিবন্ধন করে ফলাফল জানতে পারবে। প্রাক নিবন্ধন করার নিয়ম: যে কোনো অপারেটরের মোবাইল ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে- HSC Board Name (First 3 Letter) U 0026lt;U 0026gt; Roll U 0026lt;U 0026gt; Year টাইপ করে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে।