নির্বাচনের পাশাপাশি বিএনপির ভাবনায় এবার জাতীয় সম্মেলন। বিগত সরকারের নির্যাতনের কারণে তৃণমূল পর্যায়ে অনেকটাই কোণঠাসা ছিলো বিএনপি। দলের সাংগঠনিক কাজেও ছিলো বাধা।
দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সারাদেশেই চাঙা হচ্ছে বিএনপি। নির্বাচনী তোড়জোড় শুরুর আগেই দলকে শক্তিশালী করতে এবার জাতীয় সম্মেলনের কথা ভাবছেন দলের নীতি নির্ধারকরা।
সবশেষ ২০১৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপির। দলের গঠনতন্ত্রে তিন বছর পরপর সম্মেলনের কথা থাকলেও গেলো ৯ বছরে তা আলোর মুখ দেখেনি।
কারণ সম্মেলন দূরের কথা অতীতের এই সময়ে পদে পদে বাধা ও নিপীড়নের মুখে পড়ে দলটি। এ ক্ষেত্রে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের দমননীতিকেই দায়ী করে থাকে বিএনপি।
এই সময়ের মধ্যে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটিতে মৃত্যু ও ব্যক্তিগত কারণে ৫টি পদে তৈরি হয় শূন্যতা। পরে দুই ধাপে চার জন নতুন নেতা যোগ দেয়ার পরেও খালি আছে তিনটি পদ।
শুধু স্থায়ী কমিটিই নয়, নির্বাহী কমিটির অনেকে অসুস্থতা ও বয়সজনিত কারণে কিছুটা নিষ্ক্রিয়। আলোচনা আছে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনগুলো শেষ করা নিয়েও।
এই বাস্তবতায় কবে হতে পারে বিএনপির জাতীয় সম্মেলন, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমেদ জানান, কাউন্সিলের বিষয়টি আলোচনায় আছে, তবে চূড়ান্ত হয়নি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের টানা দেড় দশকের দুঃশাসনের কারণে গত আট বছরে কাউন্সিল করা সম্ভব হয়নি। এ সময়ের মধ্যে একাধিকবার কাউন্সিল করার বিষয়টি আলোচনা হলেও সম্ভব হয়নি।
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী গেলো ৮ বছরে আরও অন্তত দুটি জাতীয় সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল বিএনপির। কেনো হয়নি, সে প্রশ্নের উত্তরে উঠে আসে অতীতের বাস্তবতা।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সব মিলিয়ে ৯ বছর অনেক দীর্ঘ সময়। এই সময়ের মধ্যে অন্তত তিনটি কাউন্সিল করা যেতো।
পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কাউন্সিলের দৃশ্যমান উদ্যোগ না থাকলেও আলোচনায় আছে। কাউন্সিল একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার বিষয়। কয়েক মাস সময় লাগে। এখন সিদ্ধান্ত নিলেও তিন-চার মাস লেগে যাবে।
বিএনপির এই দুই জ্যেষ্ঠ নেতা আরও জানান, জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সাংগঠনিকভাবে আরো শক্তিশালী হয়ে নির্বাচনী দৌড়ে শামিল হবার প্রত্যাশা করছে দলটির নেতাকর্মীরা।