<

সড়ক খুঁড়ে রাখায় দুর্ভোগ, স্থানীয়দের বিক্ষোভ-মানববন্ধন

উন্নয়নকাজের জন্য সড়ক খুঁড়ে রাখায় দুর্ভোগে অতিষ্ঠ রাজধানীর উত্তরখান ও দক্ষিণখানের বাসিন্দারা বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে নেমেছেন। আজ শুক্রবার সকালে এ দুই এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বাসিন্দারা দক্ষিণখান বাজারে মানববন্ধন করেন। তাঁরা সড়কের উন্নয়নকাজের গতি বাড়ানো, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কিছু রাস্তা চলাচল উপযোগী করাসহ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন।

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলাচলের বিকল্প কোনো পথ না রেখেই প্রায় এক বছর আগে উত্তরখান ও দক্ষিণখানের সড়কগুলোর উন্নয়নকাজ শুরু করা হয়েছে। সড়ক খুঁড়ে ফেলে রাখায় একদিকে বৃষ্টির পানি, আরেক দিকে নর্দমার পানিতে দুই এলাকার অন্তত সাতটি ওয়ার্ডের বাসিন্দারা চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। আজ সকাল ১০টা থেকে প্রায় দেড় ঘণ্টা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে দক্ষিণখান ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খলিল মোল্লা বলেন, ‘আমাদের দুর্ভোগ–ভোগান্তি নিয়ে সিটি করপোরেশনের কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। একসঙ্গে সব সড়ক খুঁড়ে মানুষকে বিপদে ফেলা কোনো নীতিমালার মধ্যে পড়ে না।’

স্থানীয় বাসিন্দা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা বাসায় স্ট্রোক করেন। অনেক চেষ্টা করেও কোনো অ্যাম্বুলেন্স পাইনি। শেষে মোটরসাইকেলে দুজনের মাঝখানে বসিয়ে ওনাকে হাসপাতালে নিয়েছিলাম। চিকিৎসক বলেছেন, দেরি করে ফেলেছি। বাবাকে বাঁচাতে পারিনি।’

সড়কের এমন অবস্থার কারণে স্থানীয় ক্লিনিকগুলোতেও এখন ভালো চিকিৎসকেরা আসেন না বলে জানালেন অনেকে। সড়কের কারণে গত বুধবার দক্ষিণখানের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ সড়কে খাদিজা আক্তার সড়কেই সন্তান প্রসব করেন। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে দারুল উলুম মাদ্রাসা মসজিদের খতিব গিয়াস উদ্দিন মাদানি বলেন, এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে। একটি দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পাশের এলাকার এই অবস্থা।

এ পরিস্থিতিতে ক্ষুব্ধ বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন জমিদার বলেন, ‘রাস্তা নেই, বিশুদ্ধ পানি নেই, লাইনে গ্যাস নেই। আমরা কি মানুষ না? সরকারের কর্মকর্তারা যদি আমাদের মানুষ মনে করত, এভাবে মাসের পর মাস রাস্তা কেটে ফেলে রাখতে পারত না।’

মানববন্ধনে রাস্তার কাজের গতি দ্রুত বৃদ্ধি করা, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কিছু রাস্তা চলাচল উপযোগী করা, সব সড়কে কাজ সমাপ্তির সময় টাঙিয়ে দেওয়া, রাস্তার কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠার বিষয়ে তদারকিসহ সাতটি দাবি তুলে ধরেন দক্ষিণখান-উত্তরখান সচেতন নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ইয়াছিন রানা। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে এই এলাকা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হয়। কিন্তু এলাকার কোনো উন্নয়ন হয়নি। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা আবাসিক করের জন্য নোটিশ দেন; কিন্তু কেউ এলাকার পরিস্থিতি পরিদর্শনে আসেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।