<

সাহিত্যে নোবেল জিতলেন দক্ষিণ কোরিয়ার হান কাং

চলতি বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার লেখক হান কাং। বাংলাদেশ সময় বিকেল পাঁচটায় সুইডেনের স্টকহোম থেকে এ বছরের সাহিত্যে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে দ্য সুইডিশ একাডেমি। নোবেল পুরস্কার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মানব জীবনের দুঃখ-কষ্ট কাব্যিকভাবে রূপায়ণ করার স্বীকৃতি হিসেবে কোরীয় লেখক হান কাংকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান অ্যান্ডার্স ওলসন এক বিবৃতিতে বলেন, দেহ ও আত্মা, জীবিত ও মৃতের মধ্যে সংযোগ সম্পর্কে তিনি অনন্যভাবে সচেতন। তার কাব্যিক ও পরীক্ষামূলক শৈলী তাকে আধুনিক গদ্যের একজন পথপ্রদর্শক করে তুলেছে। শুধু কোরিয়া নয়, বিশ্ব সাহিত্যেও তিনি অনন্য।

হান কাং ১৯৭০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার শহর গোয়াংজুতে জন্ম নেন। ৯ বছর বয়সে তিনি পরিবারের সাথে সিউলে চলে আসেন। সাহিত্যপ্রেমী এক পরিবার থেকে আসা হান কাংয়ের বাবাও একজন স্বনামধন্য ঔপন্যাসিক। লেখার পাশাপাশি শিল্প ও সঙ্গীতেও নিজেকে নিয়োজিত করেছেন তিনি।

তার লেখায় এসব বিষয়গুলো বারবার প্রতিফলিত হয়েছে। ১৯৯৫ সালে ছোটগল্প সংগ্রহের মাধ্যমে তার গদ্য আত্মপ্রকাশ ঘটে এবং এর পরপরই উপন্যাস ও ছোটগল্প উভয়ই ক্ষেত্রেই কাজ করতে থাকেন হান কাং। তিনি প্রথম আলোচনায় আসেন ২০১৫ সালে তার ‘দ্য ভেজিটেরিয়ান’ উপন্যাসের জন্য।


২০১৬ সালে তিনি বইটির জন্য ম্যান বুকার পুরস্কারে ভূষিত হন। এই উপন্যাসে তিনি মানুষের নিষ্ঠুরতা নিয়ে আতঙ্কে ভুগতে থাকা এক তরুণীর ‘বৃক্ষের মতো’ বেঁচে থাকার চেষ্টার কথা তুলে ধরেন।

৫৩ বছর বয়সী হান কাংয়ের লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে একটি দক্ষিণ কোরীয় সাময়িকীতে একগুচ্ছ কবিতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে। ১৯৯৫ সালে ছোটগল্পের সংকলন প্রকাশের মধ্য দিয়ে তার গদ্য পাঠকের সামনে আসে। পরবর্তী সময়ে হান কাং দীর্ঘাকার গদ্য লেখা শুরু করেন।

২০২৪ সালের সাহিত্যের জন্য নোবেল কমিটির সদস্য আন্না-কারিন পাম বলেন, হান কাং সত্যিই তীব্র এবং গীতিময় গদ্য লিখেছেন যা কোমল এবং নৃশংস এবং কখনও কখনও কিছুটা পরাবাস্তবও। তার লেখা খুবই সমৃদ্ধ, যা অনেকগুলো ধারাকে বিস্তৃত করে। হান কাংয়ের লেখার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো বিষয়ের যেমন ধারাবাহিকতা থাকে, তেমন প্রতিটি বইতেও নতুন নতুন দিক উন্মোচিত হয়।

নোবেল কমিটি বলেছে, হান কাংকে তার ‘গভীর কাব্যিক গদ্যের’ জন্য নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে। তার সাহিত্যকর্মে পূর্বের যুগে সাধারণ মানুষের ওপর হওয়া অত্যাচার-নির্যাতন এবং মানবজাতির ভঙ্গুরতার বিষয়টি ওঠে এসেছে। হান কাং তার অনন্য সাহিত্যিক অবদানের জন্য এই সম্মান অর্জন করেছেন।

গত বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন নরওয়ের লেখক ও নাট্যকার ইয়োন ফসে। রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস ১৯০১ সাল থেকে প্রতিবছর এই পুরস্কার প্রদান করে। সব পুরস্কার বিজয়ীরা একটি পদক এবং ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রাউন (প্রায় ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) পান।