মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫
১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ছয় জনের লাশ পোড়ানোর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হওয়া পুলিশ ট্রাইব্যুনালে

বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজকের ছয় জনের লাশ পোড়ানোর শুনানি

সাভারের আশুলিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ছয় জনের লাশ পোড়ানোর ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হওয়া পুলিশ সদস্য মুকুলকে আজ (২৬ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। সকাল ১০টার দিকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুকুলকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।

বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজকের শুনানিতে ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধ এবং অন্যান্য সংঘটিত অপরাধের প্রসঙ্গে দায়ের করা একটি গণহত্যা মামলায় মুকুলকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার দেখানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

গতকাল বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে ছয় জনের লাশ পোড়ানোর মামলায় পুলিশ কনস্টেবল মুকুলকে নবাবগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়। একই মামলায় উপপরিদর্শক (এসআই) মালেককে কিশোরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উভয় আসামির বিরুদ্ধে অপরাধ সংঘটনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ট্রাইব্যুনাল ঢাকার নবম ওয়ার্ডের সাবেক সাংসদ সাইফুল ইসলামসহ চারজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার প্রতিবাদ দমনে নিষ্ঠুর পন্থা অবলম্বন করে এবং ছয়জন নিরপরাধ মানুষের মরদেহ পুড়িয়ে ফেলে।

তদন্ত কর্মকর্তারা জানান, এই ঘটনার পেছনে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ও অন্যান্য কর্মকর্তারা সেই সময়ে সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে আন্দোলন দমন এবং ক্ষমতাসীন শাসনকে রক্ষা করতে নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করেছিলেন। তাদের এই কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মনে করা হচ্ছে।

মামলায় অন্তর্ভুক্ত আরও তথ্য অনুযায়ী, আশুলিয়ায় সংঘটিত ওই ঘটনাটি স্বাধীনতার জন্য লড়াইরত জনতার অধিকার হরণের পাশাপাশি স্বাধীন বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক নীতিমালার এক করুণ লঙ্ঘনের উদাহরণ হয়ে থাকবে। গ্রেফতার হওয়া আসামিদের জবানবন্দি এবং মামলার নথিপত্র বিশ্লেষণ করে দ্রুতই চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো এই মামলার গুরুত্ব বিবেচনায় রেখে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযুক্তদের ন্যায়বিচারের আওতায় এনে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।

guest
0 মতামত সমুহ
Inline Feedbacks
View all comments