তীব্র সমালোচনা ও কোটি কোটি টাকা লোকসানের পর বিলম্বিত বোধদয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের। তিনদিন পর অবশেষে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে স্বাভাবিক হলো আলু-পেঁয়াজের স্লট বুকিং। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) থেকে আবারও ভারত থেকে বাংলাদেশের পথে যাওয়া শুরু করেছে ট্রাক বোঝাই পেঁয়াজ ও আলু। রাজ্য সরকারের স্লট বুকিং পোর্টাল ফের চালু হওয়ার স্বস্তি ফিরেছে সীমান্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের রফতানি নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও গত সোমবার কোনোরকম লিখিত নির্দেশ ছাড়াই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশ গামী আলু পেঁয়াজ বোঝাই সব ট্রাকের স্লট বুকিং বন্ধ করে করে দেয় রাজ্য সরকার। সীমান্ত বাণিজ্য কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন বিষয় হলেও সীমান্তে পণ্যবাহী ট্রাকের স্লট বুকিং সংক্রান্ত পোর্টাল নিয়ন্ত্রণ করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দাবি, রাজ্যের অভ্যন্তরীণ বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে টাস্ক ফোর্সের সুপারিশে বন্ধ করে দেয়া হয় বাংলাদেশে আলু ও পেঁয়াজের রফতানি। রাজ্য সরকারের এমন পদক্ষেপে রাতারাতি বিপাকে পড়ে হাজার হাজার সীমান্ত ব্যবসায়ী। এমন পদক্ষেপকে সরাসরি এখতিয়ার বহির্ভূত বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, যেহেতু কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো নির্দেশ নেই, তাই রাজ্য সরকারের এমন পদক্ষেপ সম্পূর্ণ বেআইনি ও অনৈতিক। গোটা বিষয় নিয়ে সোমবার থেকেই ব্যবসায়ীদের তরফে দফায় দফায় বৈঠক করা হয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। অবশেষে বৃহস্পতিবার থেকে ফের চালু করে দেয়া হয় স্লট বুকিং। স্বাভাবিক হয় সীমান্ত বাণিজ্য।
রফতানি প্রতিষ্ঠানগুলির ধারণা, সাময়িকভাবে আলু ও পেঁয়াজ রফতানি শুরু হলেও ফের বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই দীর্ঘমেয়াদী আর্থিক লোকসানের মুখে পড়তে পারেন সীমান্ত ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানির ক্ষেত্রে মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাট, উত্তর প্রদেশ, কর্ণাটক এবং পাঞ্জাব এগিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের থেকে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে যেতে গেলে তাদের যে বাঁধার সম্মুখীন হতে হবে, তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন রফতানি ব্যবসায়ী এবং পরিবহন ব্যবসায়ীরা।