গত রোববার যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় সাবেক মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াকেও আসামি করা হয়েছে। যে কারণে তাঁরা মনে করছেন, মামলায় সাবেক উল্লেখ করা হলেও বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনকেই (যদিও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে মো. মাহাবুব হোসেন) আসামি করা হয়েছে। তা ছাড়া মাহাবুব হোসেন নামে সাবেক কোনো মন্ত্রিপরিষদ সচিব নেই।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওই কর্মকর্তারা বলছেন, যেভাবে সাবেক সচিবদের একের পর এক হত্যা মামলায় আসামি করা হচ্ছে, তাতে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। মামলা নেওয়ার ক্ষেত্রে থানা–পুলিশের উচিত আরও যাচাই-বাছাই করা। তবে কারও বিরুদ্ধে অনিয়ম–দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে মামলা হতে পারে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, গত বছরের ৩ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন মাহবুব হোসেন। তাঁর অবসরে যাওয়ার কথা ছিল গত বছরের ১৩ অক্টোবর। তবে অবসরে না পাঠিয়ে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে আরও এক বছরের জন্য একই পদে চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছিল। কাগজপত্রে ১৩ অক্টোবর তাঁর চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে আগামী বৃহস্পতিবারই (১০ অক্টোবর) তাঁর শেষ কর্মদিবস। কারণ, ১১–১২ অক্টোবর সাপ্তাহিক ছুটি আর ১৩ অক্টোবর শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটি। অবশ্য তাঁর চুক্তির মেয়াদ আবার বাড়ানো হলে সেটি ভিন্ন কথা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলি করে হত্যার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা ওই মামলায় সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও আহমেদ কায়কাউস, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ও ফয়েজ আহমেদ এবং সাবেক সচিব আনিছুর রহমানকে (নির্বাচন কমিশনারও ছিলেন) আসামি করা হয়েছে।
যাত্রাবাড়ী থানায় মামলাটি হয়েছিল গত ১৯ জুলাই বিকেলে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি করে হত্যার ঘটনায়। সেদিন গুলিতে মেহেদী হাসান (১৮) নামের এক তরুণ নিহত হন। নিহত মেহেদীর চাচা মো. নাদিম বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলার বিষয়ে গত রোববার ও গতকাল কয়েক দফায় তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে প্রথম আলো; কিন্তু ফোনে তাঁকে পাওয়া যায়নি।
এ মামলার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. ইসরাইল হাওলাদার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) গতকাল রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাহাবুব হোসেন নামে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে কেউ আছেন কি না, সেটি তো আমরা এখনো খুঁজিনি। তদন্ত করতে গেলে সেটি খোঁজা হবে। মামলার বাদী তো মাহাবুব হোসেনকে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে মামলায় লিখে দিয়েছেন। তদন্ত শুরু হলে না বোঝা যাবে, মাহাবুব হোসেন নামে কেউ সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কি না?’