<

শেরপুরে নকলায় পানিতে ডুবে একজনের মৃত্যু

শেরপুরে মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি কমায় এবং বৃষ্টি না হওয়ায় জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এদিকে নকলা উপজেলায় গতকাল রোববার বন্যার পানিতে ডুবে একজনের মৃত্যু হয়েছে।

জেলা, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরের পর থেকে শেরপুরে বৃষ্টি হয়নি। এ ছাড়া মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি অনেকটাই কমেছে। এর ফলে আজ সোমবার ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী, শেরপুর সদর ও নকলা উপজেলার ২০টি ইউনিয়নে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এসব ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম থেকে বন্যার পানি ধীরে ধীরে নিম্নাঞ্চলে নেমে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী। তবে নকলা উপজেলার ধনাকুশা উচ্চবিদ্যালয় ও তারাকান্দা দাখিল মাদ্রাসা বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো শতাধিক মানুষ অবস্থান করছে।

এ দিকে গতকাল সন্ধ্যায় বন্যার পানিতে ডুবে নকলা উপজেলার গণপদ্দি ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামে মো. আবদুর রাজ্জাক (৫০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

পাউবোর শেরপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল ৯টায় জেলার ভোগাই নদের পানি বিপৎসীমার ১৩৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে, চেল্লাখালী নদীর পানি ৭৭ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৫৪০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার পাহাড়ি নদ মহারশি ও সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে আছে।

পাউবো শেরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকীবুজ্জামান আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, নদ-নদীর পানি দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। বৃষ্টি না হলে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে বলে আশা করা যায়।

এদিকে বন্যার পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে বেহাল গ্রামীণ সড়কের চিত্র ভেসে উঠছে। ঝিনাইগাতী উপজেলার ঝিনাইগাতী-ফাকরাবাদ সড়কের বিভিন্ন অংশ ঢলের পানিতে ভেঙে যাওয়ায় ওই সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে।

ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. জাহিদুল হক বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বন্যাকবলিত মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। এখনো দুর্গম এলাকায় মানুষের খাদ্যসংকট আছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বিএনপি, জামায়াতসহ রাজনৈতিক দল ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা অপ্রতুল।

জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাকবলিত সব এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এ কাজে সেনাবাহিনীর সদস্যরা সার্বিক তৎপরতা চালাচ্ছেন ও সহযোগিতা করছেন। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ব্যবসায়ীসহ সবাই এগিয়ে এসেছেন। সবাই মিলে এ দুর্ভোগ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।