<

পাকিস্তান থেকে আসা জাহাজটির কন্টেইনারে যা যা আছে

গত বুধবার প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের করাচি থেকে কন্টেইনার বহনকারী একটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে। পানামার পতাকাবাহী ‘উয়ান জিয়াং ফা ঝান’ নামের জাহাজটি ৩৭০ কন্টেইনার নিয়ে বন্দরে আসে। এরপর থেকে এ নিয়ে নানামুখী আলোচনা চলছে। জাহাজটির কন্টেইনারে ভেতর কী ছিল তা নিয়েও অনেকের কৌতুহল রয়েছে।

কাস্টমস সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তান থেকে আসা কন্টেইনারে সোডিয়াম কার্বোনেট (সোডা অ্যাশ), ডলোমাইট, চুনাপাথর, পোশাক শিল্পের কাঁচামাল, কাপড়, রং ও গাড়ির যন্ত্রাংশ এসেছে। এছাড়া, ৪২টি কন্টেইনারে পেঁয়াজ ও ১৪টি কন্টেইনার আলু বোঝাই ছিল।

পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যও বিলিয়ন ডলারের কম। ফলে সরাসরি কন্টেইনার জাহাজ চলাচল ছিল না। আগে পাকিস্তান থেকে আনা পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হতো। গত ৫ আগস্ট পট পরিবর্তনের পর এক প্রজ্ঞাপনে এই কড়াকড়ি শিথিল করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।

এদিকে, করাচি-চট্টগ্রাম রুটে প্রথম কনটেইনার জাহাজ চালু করেছে দুবাইভিত্তিক সংস্থা ‘ফিডার লাইনস ডিএমসিসি’। বাংলাদেশে তাদের শিপিং এজেন্ট কর্ণফুলী গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান রিজেন্সী লাইনস। কর্ণফুলী গ্রুপ আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর পারিবারিক কোম্পানি।

কর্ণফুলী গ্রুপ নির্বাহী পরিচালক আনিস উদ দৌলা বলেন, কন্টেইনারগুলো নিয়ে যদি কোনো প্রশ্ন থাকত তাহলে পাকিস্তানের হাইকমিশন তা নিয়ে কখনো পোস্ট দিত না। তাছাড়া, কন্টেইনারগুলোর এখনও পোর্টেই রয়েছে।

অপরদিকে, পাকিস্তানের থেকে কন্টেইনার নিয়ে আসা জাহাজ নিয়ে চলা আলোচনা রাজনৈতিক বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। নতুন নৌ-রুট চালু হওয়ায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়বে বলে আশা তাদের।

বিজিএমইএ’র সাবেক সহ সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পাকিস্তান অন্যতম তুলা রফতানিকারক দেশ। দেশটি বেশি পরিমাণে কাপড় উৎপাদন করে থাকে। বর্তমানে তা শুধুমাত্র চীন থেকে আমদানি করা হয়। এক্ষেত্রে আরেকটি দেশ যুক্ত হলে প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা পাওয়া যাতে পারে।

পাকিস্তান থেকে কন্টেইনার আসা নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যবসা ও রাজনীতিকে আমরা গুলিয়ে ফেলছি। নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সন্দেহ থাকলে তা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স দেখানোর বিকল্প নেই।

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে দিয়ে আসা পণ্যগুলোর দলিলাদি সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। তাছাড়া কাস্টমস কর্তৃক যাছাই-বাছাইয়ের পণ্যগুলো বের হয়। ফলে এখানে লুকোচুরির কোনো সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, দুবাই থেকে জাহাজটি আসার সময় করাচি থেকে কিছু কন্টেইনার বহন করে নিয়ে আসে। ওই কন্টেইনারগুলো আগে সিঙ্গাপুর বা কলম্বো হয়ে আসতো।

এরইমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা জাহাজটি পণ্য খালাস শেষে ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ২৮৯ টি কন্টেইনার নিয়ে গেছে। এর মধ্যে রফতানি পণ্যবাহী কন্টেইনার একটি ও বাকিগুলো খালি।