‘এটা আমার জন্য কেয়ামতের মতো। আমি প্রতিনিয়তই কষ্ট পাচ্ছি। আপনি কি কল্পনা করতে পারেন- আমি আমার বাচ্চাদের চোখের সামনে মরতে দেখছি।’
কাঁদতে কাঁদতে ভারি কণ্ঠে এমনটাই বলছিলেন আমিনা। তার সাত মাস বয়সি শিশু হাজরা আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশের একটি হাসপাতালে ভর্তি। জীর্ণ শরীর এবং শ্বাসকষ্টে বিছানায় কাতরাচ্ছে ছোট্ট হাজরা।
প্রয়োজনীয় খাবার, অপুষ্টি এবং নানা রকম অসুখ-বিসুখে ধুঁকে মরছে আফগানি শিশুরা। তালেবান শাসকদের নীতি নির্দেশনার কারণে দেশটিতে ব্যাপকহারে কমেছে তহবিল। এছাড়াও নারীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও নানা বিধিনিষেধে আয়ের পথও বন্ধ হয়ে গেছে। তালেবানদের এমন কঠোর নীতির প্রভাব পড়ছে দেশটির সাধারণ জনগণের ওপর। বিবিসি।
৪০ বছরের যুদ্ধ, চরম দরিদ্র এবং তালেবান শাসনের চরমপন্থি আচরণে নানা সমস্যায় জর্জরিত আফগানিস্তান। তীব্র অপুষ্টিতে আক্রান্ত ৩.২ মিলিয়ন শিশু। হাসপাতালেও নেই যথেষ্ট জায়গা। একসঙ্গে এক বিছানায় রাখা হয় তিন শিশুকে। হতাশায় চিৎকার করে আমিনা বলছিলেন, এখন পর্যন্ত তিনি তার ছয় সন্তানকে হারিয়েছেন।
https://googleads.g.doubleclick.net/pagead/ads?gdpr=0&us_privacy=1—&gpp_sid=-1&client=ca-pub-9589667218503970&output=html&h=250&slotname=2659133216&adk=742404044&adf=1233144953&pi=t.ma~as.2659133216&w=300&abgtt=6&lmt=1728177220&format=300×250&url=https%3A%2F%2Fwww.jugantor.com%2Finternational%2F861436&wgl=1&uach=WyJXaW5kb3dzIiwiMTQuMC4wIiwieDg2IiwiIiwiMTI5LjAuNjY2OC45MCIsbnVsbCwwLG51bGwsIjY0IixbWyJHb29nbGUgQ2hyb21lIiwiMTI5LjAuNjY2OC45MCJdLFsiTm90PUE_QnJhbmQiLCI4LjAuMC4wIl0sWyJDaHJvbWl1bSIsIjEyOS4wLjY2NjguOTAiXV0sMV0.&dt=1728177220426&bpp=1&bdt=89&idt=238&shv=r20241001&mjsv=m202410020101&ptt=9&saldr=aa&abxe=1&cookie=ID%3Df420dc57a7c6889b%3AT%3D1728176549%3ART%3D1728177173%3AS%3DALNI_MZ8fgGemwyARJmfOKX-z0X9xD_QJQ&gpic=UID%3D00000f3613a542b6%3AT%3D1728176549%3ART%3D1728177173%3AS%3DALNI_MZym6tO_K3jVBFq-Fu_VR0-CgtBGA&eo_id_str=ID%3D5781116c17cec5be%3AT%3D1728176549%3ART%3D1728177173%3AS%3DAA-AfjbXw2tVZ8jNWIBpXNJYyxCO&prev_fmts=0x0%2C728x90&nras=1&correlator=2117093479287&frm=20&pv=1&u_tz=360&u_his=11&u_h=800&u_w=1280&u_ah=752&u_aw=1280&u_cd=24&u_sd=2&dmc=8&adx=-12245933&ady=-12245933&biw=1263&bih=665&scr_x=0&scr_y=0&eid=44759875%2C44759926%2C44759842%2C95338737%2C44795921%2C95331689%2C95341937%2C95342016%2C95343454%2C31087767%2C95335247&oid=2&pvsid=672222512843796&tmod=1402178301&uas=0&nvt=1&ref=https%3A%2F%2Fwww.jugantor.com%2F&fc=1920&brdim=0%2C0%2C0%2C0%2C1280%2C0%2C1280%2C752%2C1280%2C665&vis=1&rsz=%7C%7CenEr%7C&abl=CS&pfx=0&fu=32768&bc=31&bz=1&td=1&tdf=2&psd=W251bGwsbnVsbCxudWxsLDNd&nt=1&ifi=4&uci=a!4&fsb=1&dtd=399
তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানরা দারিদ্র্যের কারণে মারা যাচ্ছে। আমি শুধু তাদের খাওয়াতে পারি তা হলো শুকনো রুটি এবং পানি।’ অপুষ্টি ওয়ার্ডের পাশের নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে আরেক শিশু ছয় মাস বয়সি ওমরাহ। গুরুতর নিউমোনিয়ার সঙ্গে লড়াই করছে সে। একজন নার্স তার শরীরে স্যালাইনের ড্রিপ লাগালে ব্যথায় কাতরাতে দেখা যায় তাকে। ওমরাহর মা নাসরিন তার পাশে বসে আছেন। সন্তানের এই অবস্থা দেখে অসহায় মায়ের মুখ দিয়ে শুধু অশ্রু ঝরছে।
কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, ‘আমি যদি তার জায়গায় মরতে পারতাম। আমার খুব ভয় করছে।’ দুদিন পর জানা যায় ছোট্ট ওমরাহ পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে। কিন্তু তালেবান শাসকরা নিজেদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
তালেবান সরকারের ডেপুটি মুখপাত্র হামদুল্লাহ ফিতরাত বলেন, ‘আমরা দরিদ্র এবং অপুষ্টির সমস্যা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি। পাশপাশি বন্যা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে এখন পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি করা, তাদের উচিত এটিকে রাজনৈতিক এবং অভ্যন্তরীণ সমস্যার সঙ্গে যুক্ত করা উচিত নয়।’
শিশুদের এমন পরিস্থিতি নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘের শিশু অধিকার সংস্থা ইউনিসেফ। সংস্থাটির মতে, অফগানিস্তানে এমনই চলতে থাকলে শিশুদের মধ্যে অপরিবর্তনীয় শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও মস্তিষ্কের ক্ষতিসহ বিকলাঙ্গের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। যার প্রভাব সারা জীবন স্থায়ী হতে পারে, এমনকি পরবর্তী প্রজন্মকেও প্রভাবিত করতে পারে।
এ বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন হাসপাতালের চিকিৎসক সিকান্দার গণি। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তান এরই মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে লড়াই করছে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বড় অংশ যদি শারীরিক বা মানসিকভাবে অক্ষম হয়, তাহলে আমাদের সমাজ কীভাবে তাদের সাহায্য করতে পারবে?’