আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি! আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। শেষ মুহূর্তের প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী এবং মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যগুলোর সভা-সমাবেশে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি রেডিও টক শো ও পডকাস্টে কথা বলছেন তারা। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, নির্বাচনী লড়াইয়ে দুই প্রার্থীর অবস্থান প্রায় কাছাকাছি। নির্বাচনকে নিয়ে করা বিভিন্ন জরিপে এটাই দেখা যাচ্ছে যে এবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত নারী প্রেসিডেন্ট বেছে নেয়নি মার্কিন নাগরিকরা। আর দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চলতি বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন কমলা হ্যারিস।
তার প্রচার উদারপন্থী ভোটারদের পুনরুজ্জীবিত করেছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কমলা হ্যারিসের প্রচার তহবিলে জমা পড়েছে ৬৭.১ কোটি ডলার অনুদান, যা তার রিপাবলিকান প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সংগ্রহের প্রায় তিনগুণ।
সাম্প্রতিক জনমত জরিপ অনুযায়ী, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে জো বাইডেনের তুলনায় ভাল করতে পারেন কমলা হ্যারিস। যদিও নির্বাচনি দৌড়ে কঠোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হবেন তিনি।
গতকাল প্রকাশিত এবিসি নিউজের সম্ভাব্য ভোটারদের মধ্যে জাতীয় জরিপে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস তার প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পের চেয়ে ২ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। তবে নির্বাচনের ফলাফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখতে পারে ইলেক্টোরাল কলেজ।
জরিপে দেখা যাচ্ছে, কমলা ৪৯ শতাংশ আর ট্রাম্প ৪৭ শতাংশ ভোটারের পছন্দ। কমলার জন্য আরেকটি সুখবর হলো, তার সমর্থক কিছু গোষ্ঠী ভোট দেওয়ার দিকে ঝুঁকছে।
তবে, নির্বাচনে পুরুষ ভোটারদের মধ্যে পছন্দের দিক দিয়ে বেশ এগিয়ে রয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিপরীতে নারী ভোটাররা জরিপকারীদের বলছেন, তারা ডেমোক্রেটিক দলীয় প্রার্থী ও বর্তমানে ক্ষমতাসীন সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিসকে পছন্দ করেন।
মার্কিন জনগণের মধ্যে এই যে লিঙ্গগত ব্যবধান তা মূলত গত এক দশকের সামাজিক টানাপোড়েনের প্রতিফলন যা এবারের নির্বাচনে ভোটারদের রাজনৈতিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারে।
এছাড়া মার্কিন পুরুষদের মধ্যে এমন একটা ধারণার সৃষ্টি হয়েছে যে এ দেশের রাজনীতিকেরা, বিশেষত ডেমোক্রেটিক পার্টি, নারীর স্বার্থ রক্ষায় যতটা সচেতন, পুরুষদের ব্যাপারে ততটা নয়। গত অর্ধশতকে নারীবাদী আন্দোলনের ফলে মেয়েরা এখন আর ঘরে বসে নেই। সমাজে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই তারা দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছেন।
তবে, পুরুষ সমর্থনে পিছিয়ে থাকলেও দেশের সব বর্ণের ও বয়সের মেয়েদের মধ্যে কমালার সমর্থন ট্রাম্পের চেয়ে ২০ পয়েন্টের বেশি। সবচেয়ে বিস্ময়কর যা তা হলো ৫০ বা তার চেয়ে বেশি বয়সী নারীরাই কমলার প্রধান ‘ভোটব্যাংক’। এক হিসাবমতে, এই বয়সী নারী ভোটারের সংখ্যা ৬ কোটি ৩০ লাখ এবং তাদের ৯৭ শতাংশ নিয়মিত ভোট দিয়ে থাকেন।
সব মিলিয়ে কে হচ্ছেন এবারের নির্বাচনে জয়ী, সময়ই তা বলে দিবে।