<

পাকিস্তানে নতুন প্রক্রিয়ায় প্রধান বিচারপতি নিয়োগ, বিরোধীদের ক্ষোভ

পাকিস্তানে নতুন একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে পরবর্তী প্রধান বিচারপতি হিসেবে ইয়াহিয়া আফ্রিদিকে নির্বাচিত করা হয়েছে। গতকাল বুধবার পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি তৃতীয় জ্যেষ্ঠ এ বিচারপতিকে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন।

সরকারবিরোধীরা জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে বিচারপতি নিয়োগের এ প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেছেন। তাঁরা বলছেন, প্রক্রিয়াটি বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করবে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, জ্যেষ্ঠতার বিচারে বিদায়ী প্রধান বিচারপতির পর তৃতীয় অবস্থানে আছেন ইয়াহিয়া আফ্রিদি। বিচারপতি নিয়োগে প্রচলিত প্রক্রিয়া সংশোধনী আনার মধ্য দিয়ে সংসদীয় প্যানেল তাঁকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে বেছে নিয়েছেন।

পাকিস্তানের আইনমন্ত্রী আজম তারারের দেওয়া তথ্য অনুসারে, বিদায়ী প্রধান বিচারপতি আগামীকাল শুক্রবার অবসরে যাবেন। তাঁরই স্থলাভিষিক্ত হবেন আফ্রিদি। তাঁর মেয়াদ হবে তিন বছর।

পাকিস্তানে আগের প্রক্রিয়া অনুসারে প্রধান বিচারপতির পর সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ যে বিচারপতি থাকতেন, তিনিই স্বয়ংক্রিয়ভাবে শীর্ষ বিচারপতি হতেন। কিন্তু দেশটির সরকার ও তাদের মিত্র দলগুলো গত রোববার পার্লামেন্টে জরুরি অধিবেশন ডাকে। সারা রাত ধরে ওই অধিবেশন চলে। সোমবার ভোরের দিকে তা শেষ হয়। ওই অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি বাছাই প্রক্রিয়াটি সংশোধন করা হয়।

পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই) নতুন প্রক্রিয়াটির বিরোধিতা করেছে। দেশটির কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন দলটি বলেছে, এটি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করার প্রচেষ্টা।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, পিটিআইয়ের এ আপত্তির সঙ্গে জ্যেষ্ঠ কয়েকজন আইনজীবীও সংহতি প্রকাশ করতে পারেন। এসব আইনজীবী বলেছেন, তাঁরা নতুন এ নিয়োগপ্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে।

যে সংসদীয় প্যানেলটি আফ্রিদিকে প্রধান বিচারপতি হিসেবে বাছাই করেছে, সে প্যানেলে পিটিআইও সদস্য। তবে দলটি এ নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া বর্জন করেছে। সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতিকে প্রধান বিচারপতি না করা হলে বিক্ষোভে নামারও ঘোষণা দিয়েছে তারা।

আফ্রিদির নিয়োগের আগে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের প্রধান নির্বাহী এবং পিটিআই নেতা আলী আমিন গান্দাপুর বলেছেন, এই সরকারের পতন না হওয়া পুরো দেশকে অবরুদ্ধ করে রাখার মতো চূড়ান্ত একটি পদক্ষেপ নিতে পারেন তাঁরা। ‘করো বা মরো’—এমন অদম্য ইচ্ছাশক্তি নিয়ে মাঠে নামার জন্য আন্দোলনকারীদের প্রতি আহ্বান জানানো হবে।

এক বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছেন ইমরান খান। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে তাঁর এবং সরকারের মধ্যে বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আইনি লড়াই চলছে।