চার বছর ধরে নির্যাতন, যেভাবে উদ্ধার হলো কল্পনা

পুরো শরীর জুড়ে দগদগে ঘা। ৪ বছর ধরে আটকে রেখে এমন কোনো নির্যাতন নেই যা করা হয়নি। বলছি, রাজধানীর বসুন্ধরার আবাসিক এলাকার এক বাসার ১৩ বছরের গৃহপরিচারিকা কল্পনার কথা।

কল্পনার অভিযোগ, বিনা কারণে মারধরের পাশাপাশি তাকে খাবারও দেয়া হতো না। ভেঙে ফেলা হয়েছে সামনের চারটি দাঁত। হবিগঞ্জের এই মেয়েটিকে একাত্তরের সহায়তায় উদ্ধার করেছে ভাটারা থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলাও নিয়েছে তারা।

মানুষ কতোটা নিষ্ঠুর হতে পারে তার জ্বলন্ত প্রমাণ ১৩ বছরের কল্পনার ক্ষতবিক্ষত শরীর। একটু ভালো থাকার আশায় শিশু বয়সে গৃহকর্মীর কাজ নেয়া কল্পনার শরীর গরম পানি দিয়ে ঝলসে দেয়া, মেরে সামনের চারটি দাঁত ফেলা দেয়াসহ এমন কোনো নির্যাতন নেই যা করা হয়নি তাকে।

শনিবার দুপুরে একাত্তরের কাছে আসে কল্পনার বাঁচার আকুতির একটি ভিডিও ও বাড়ির ঠিকানা। এরপর ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহযোগিতায় ভাটারা থানার পুলিশকে সাথে নিয়ে বসুন্ধরার বাসায় যায় একাত্তর টিম। বাসার দরজা খুলতে পুলিশের কাছে বাঁচার আকুতি জানায় কল্পনা।

কল্পনার অভিযোগ, কাজের সামান্য ভুল আবার কখনো বিনা কারণেই অমানবিক নির্যাতন চলতো তার ওপর। কাঠের ব্রাশ দিয়ে মেরে ফেলা দিয়েছে চারটি দাঁত। চুল সোজা করার ইলেকট্রিক মেশিন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে দুই হাত। মেরে ভেঙে ফেলা বেতও মিলেছে বাসায়।

নির্যাতনে অভিযুক্ত দিনাত জাহান আদর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতেন। বর্তমানে কিছুই করেন না। বাসায় এক ভাই ও বন্ধুরা আসে মাঝে মাঝে। বাসার কেয়ারটেকার ও প্রতিবেশীরা বলছেন, নির্যাতনের বিষয়ে তারা কিছুই টের পাননি।