<

দুই মাস পর উপাচার্য ও সহ-উপাচার্য পেল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

প্রায় দুই মাস পর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য ও সহ–উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) শিক্ষক অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম। উপাচার্য না থাকার সময়ে গত সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক হিসেবে তিনি জরুরি আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

অন্যদিকে সহ-উপাচার্য হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক মো. হারুনর রশিদ খান ও কোষাধ্যক্ষ (ট্রেজারার) পদে ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক মো. নূরুন্নবী নিয়োগ পেয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোছা. রোখছানা বেগম স্বাক্ষরিত আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপনে তাঁদের নিয়োগ দেওয়া হয়। আগামী চার বছরের জন্য তাঁরা নিজ নিজ পদে দায়িত্ব পালন করবেন।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক এস এম মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আলাদা আলাদা তিনটি প্রজ্ঞাপনে উপাচার্য, সহ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে। প্রায় দুই মাস ধরে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য থাকায় এক প্রকার অভিভাবকশূন্য হয়ে পড়েছিল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা চাইলেও গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে পারছিলেন না। এখন একসঙ্গে ঊর্ধ্বতন তিনটি পদে নিয়োগ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থবির অবস্থা কেটে যাবে।

এর আগে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকারের পতনের পর ২০ আগস্ট উপাচার্য অধ্যাপক মাহমুদ হোসেন, সহ-উপাচার্য মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, কোষাধ্যক্ষ অমিত রায় চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার খান গোলাম কুদ্দুসসহ ৬৭ পদে থাকা কর্মকর্তারা পদত্যাগ করেন। একসঙ্গে এত কর্মকর্তারা পদত্যাগ করায় বিশ্ববিদ্যালয়ে একধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়। কোনো আবাসিক হলে এখনো প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

প্রজ্ঞাপনে উপাচার্য নিয়োগের শর্তে বলা হয়েছে, চার বছরের জন্য উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ওই পদে তিনি বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতন-ভাতা পাবেন। এ ছাড়া বিধি অনুযায়ী পদসংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন এবং সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। একই শর্ত দেওয়া হয়েছে সহ-উপাচার্য ও ট্রেজারার নিয়োগের প্রজ্ঞাপনেও।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩তম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে নিযুক্ত তৃতীয় উপাচার্য। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সর্বজ্যেষ্ঠ শিক্ষক। তিনি নগর ও গ্রামীণ পরিকল্পনা ডিসিপ্লিনের প্রতিষ্ঠাতাপ্রধান ছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা স্কুলের ডিন হিসেবে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বাইরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স সেলের পরিচালকের দায়িত্ব পালনসহ সিনেট, সিন্ডিকেট সদস্য ও ছাত্রবিষয়ক পরিচালক হিসেবে তিনি বিভিন্ন মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

অধ্যাপক রেজাউলের পেশাগত অভিজ্ঞতা অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের আগে তিনি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করেছেন। এ ছাড়া অষ্টম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি বিশ্বব্যাংকের কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পে ইন্সটিটিউশনাল ডেভেলপমেন্ট গ্র্যান্ট স্পেশালিস্ট হিসেবেও পরামর্শকের ভূমিকা পালন করেছেন, যা তাঁকে শিক্ষা খাতে আন্তর্জাতিক প্রকল্পে নেতৃত্বের দক্ষতা দিয়েছে।