প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর বন্যায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, বাজারে সিন্ডিকেট করা হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। বাজার সিন্ডিকেট এবং চাঁদাবাজির তথ্য দিতে সাংবাদিকদের প্রতি আহবানও জানিয়েছেন তিনি। সাংবাদিকদের সরকারের চোখ হিসেবেও উল্লেখ করেন তিনি।
মঙ্গলবার রাজধানীর খাদ্য ভবনের সামনে কৃষি পণ্য ওপেন মার্কেট সেল কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন। নিম্নআয়ের মানুষের জন্য কমদামে পণ্য বিক্রির এই কর্মসূচিতে সরকার ডিম, আলু, পেঁয়াজসহ ১০টি কৃষিপণ্য সুলভ মূল্যে বিক্রি করবে। কম আয়ের মানুষ বলছেন, বাজারের চেয়ে এখানে দাম বেশ কম। সব সময় দেয়া হলে কষ্ট কমতো।
চলতি বছর, দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েক দফা বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ধান, শাকসবজিসহ সব ধরনের ফসল উৎপাদনের। বন্যার এই প্রভাব পড়েছে বাজারে। সব ধরনের সবজির দাম এখন গড়ে একশ’ টাকার উপরে। কাঁচা মরিচের দাম আরো বেশি। পেঁয়াজের দামও দেড়শ ছুঁইছুঁই্। আর নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টির একমাত্র পণ্য ডিমের দাম দুইশ’র ঘরে। এই পরিস্থিতিতে সরকার আবারও ডিমের দাম ঠিক করে দিয়েছে।
বাজারে নিত্যপণ্যের দাম যখন আকাশছোঁয়া তখন নিম্ন আয়ের মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে কম দামে ডিম, আলু, পেঁয়াজ আর বিভিন্ন ধরনের সবজি বিক্রির কার্যক্রম শুরু করলো খাদ্য ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। এই কর্মসূচির আওতায় জনপ্রতি এক কেজি আলু ৩০ টাকা, এক ডজন ডিম ১৩০ টাকা, এক কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা, এক কেজি কাঁচা পেঁপে ২০ টাকায় এবং পাঁচ কেজি বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি বিক্রি করা হবে।
প্রাথমিকভাবে রাজধানীর ২০টি স্থানে ট্রাক সেলের মাধ্যমে এসব কৃষিপণ্য দেওয়া হবে। স্থানগুলো হলো– খাদ্য ভবন, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, মিরপুর-১০, বাসাবো, বসিলা, রায়ের বাজার, রাজারবাগ, মুগদা-উত্তর, মুগদা-দক্ষিণ, পলাশি মোড়, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, মহাখালী বাসস্ট্যান্ড, বেগুনবাড়ী, উত্তরখান, দক্ষিণ খান, কামরাঙ্গীরচর, রামপুরা ও ঝিগাতলা।
নিম্ন আয়ের মানুষ বলছেন, কম দামে পণ্য পেয়ে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। তবে, নিয়মিতই কম দামে সবজি সরবরাহ করার দাবি তাদের। এই প্রসঙ্গে কৃষি উপদেষ্টা জানান, কৃষি পণ্য ওএমএস প্রথমে রাজধানীতে শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে এ কার্যক্রম সারা দেশে চালু করা হবে।
নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী দাম প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বন্যায় বিভিন্ন অঞ্চলে শাক-সবজির ক্ষতি হয়েছে। এর প্রভাব বাজারে পড়েছে। তবে দাম তাড়াতাড়িই কমে আসবে বলে তার প্রত্যাশা। তিনি বলেন, এবার সারাদেশেই বন্যা হয়েছে। বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। তবে সিন্ডিকেট করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
সাংবাদিকদের সরকারের চোখ উল্লেখ করে কৃষি উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম তাদের কাছে বাজার সিন্ডিকেট এবং দেশের কোথায় কোথায় চাঁদাবাজি হচ্ছে তার তথ্যও চেয়েছেন। উপদেষ্টা বলেন, সাংবাদিকরা আমাদের মূল চোখ। আপনারা দেশের কোথায় কোথায় সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজি হচ্ছে, তা খুঁজে দিন।