পটুয়াখালীর বাউফলে একজন শিক্ষকের বসতঘর হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় দুইদিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ। শনিবার (১২ অক্টোবর) বেলা এগারোটায় উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ছয়হিস্যা তাঁতেরকাঠি গ্রামে একজন শিক্ষকের বসতঘরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাউফল থানা পুলিশ।
গতকালই থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী শিক্ষক। অভিযুক্ত পরিবার অভিযোগ স্বীকারও করেছেন তবুও এখনো মামলা হয়নি। ভুক্তভোগী শিক্ষকের নাম আলমগীর হোসেন মাষ্টার (৫৮)। তিনি তাঁতেরকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক। তার বসতঘরে হামলা ভাঙচুরের ও লুটপাটের ঘটনায় অভিযুক্ত তারই আপন ভাতিজা করিম শাহ (৩২) ও কাওসার শাহ (২৮) এবং অজ্ঞাত ১৩-১৫ জন দুর্বৃত্ত্ব।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিক্ষক আলমগীরের সাথে তার বড় ভাই’র বাড়ির বাগানের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছিলো। স্থানীয়ভাবে ও থানা পুলিশের মাধ্যমে একাধিকবার চেষ্টা করেও যা সমাধান করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার শিক্ষক আলমগীর নিজ ঘরের সাথে তার ভোগদখলকৃত জমিতে বসতঘর সংযুক্ত খাবার ঘর ও রান্নাঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেন। পূর্ব বিরোধের জেরে শনিবার বেলা ১১টার দিকে করিম শাহ ও কাওসার শাহ’র নেতৃত্বে ১২-১৫ জন দুর্বৃত্ত্ব নির্মানাধীন সেই ঘর ভাঙচুর করে এবং ভুক্তভোগীর বসতঘরে ঢুকে আলমারি ভেঙ্গে নগদ টাকা ও স্বর্নালঙ্কার লুটপাট করে।
এসময় বাড়ির অন্যান্য মহিলারা বাধা দিলে, তাদের দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে অভিযুক্তরা। এসময় জরুরি সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে বিষয়টি জানালে ঘটনাস্থলে যায় বাউফল পুলিশের একটি দল। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালে তখন পালিয়ে যায় অভিযুক্তরা এবং দুর্বৃত্ত্বরা।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত করিম শাহ ও কাওসার শাহ’র ঘরে গিয়ে তাদের পাওয়া যায়নি। তাদের বাবা আবুল কাশেম শাহ ও মা সুফিয়া বেগম বলেন, শিক্ষক আলমগীর সালিশের সিদ্ধান্ত ছাড়াই বাড়িতে নতুন ঘর নির্মাণের কাজ করেছে, তাই আমাদের মেজো ছেলে (করিম) লোকজন নিয়ে ঘর ভেঙে ফেলেছে। তবে আলমগীরের বসত ঘরে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ মিথ্যা।’
পুলিশকে না জানিয়ে নিজেরা কেন ভাঙচুর করেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, সন্তানদের তারা নিষেধ করেছিলো কিন্তু এখন সন্তানরা বড় হয়েছে ভালোমন্দ তারা বোঝেন। তারা (সন্তান) যেটা ভালো মনে করেছেন তাই করেছেন।
এদিকে অভিযুক্ত পরিবার ঘটনা স্বীকার করলেও দুই দিনে মামলা নেয়নি বাউফল থানা পুলিশ। অভিযোগের তদন্ত অফিসার ও বাউফল থানার উপপরিদর্শক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, জরুরি সেবার ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যকার বিরোধ স্থানীয়ভাবে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিলো। সিদ্ধান্তের অপেক্ষা না করে ঘর নির্মাণ করেছেন ভুক্তভোগী। এজন্য অভিযুক্তরা সেটা ভেঙে ফেলেছেন। থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া আছে। আমরা প্রাথমিক তদন্ত করেছি। আরো অধিকতর তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।