<

পরকীয়ার অভিযোগে দুই ইউপি সদস্যকে নির্যাতন

রাজবাড়ীতে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে দুই ইউপি সদস্যকে বেঁধে শারীরিক নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) ছড়িয়ে পড়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। এ বিষয়ে শনিবার রাজবাড়ী সদর থানায় পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, বসন্তপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান খান বসন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য উজ্জ্বল সরকার ও ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য হেলেনা বেগমকে দড়ি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধরক মারছেন।

রায়হানের মারধরে হেলেনা বেগম চিৎকার করেন। এসময় রায়হান অকথ্য ভাষায় দুই ইউপি সদস্যকে গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে রায়হান হেলেনা বেগমের গলা থেকে স্বর্ণের চেইন খুলে নেন।

চেইন খোলার সময় ইউপি সদস্য হেলেনা বেগমকে বলতে শোনা যায়, ‘এটি বিয়ের সময় আমার স্বামী আমাকে দিয়েছে।’ পাশ থেকে আরও এক যুবক লাঠি হাতে তেড়ে এসে দুই ইউপি সদস্যকে মারধর করেন। এসময় ঘরের মধ্যে অনেক লোকজনকে দেখা যায়। কয়েকজনকে মারধরের দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতেও দেখা যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন জানান, বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে ইউপি সদস্য উজ্জ্বল সরকার ও হেলেনা বেগম স্থানীয় পূজা মণ্ডপে পূজা দেখেন। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে উজ্জ্বল সরকার মোটরসাইকেলে হেলেনা বেগমকে বাজিতপুর গ্রামে হেলেনার স্বামীর বাড়িতে নামিয়ে দিতে যান। এসময় রায়হান তার সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়িতে গিয়ে পরকীয়ার অপবাদ দিয়ে দুই ইউপি সদস্যকে ধরে নিয়ে আসেন।

পরে তাদের মহারাজপুর ব্রিজ এলাকার একটি দোকান ঘরে আটকে বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। একপর্যায়ে হেলেনা বেগমের গলা থেকে স্বর্ণের চেইন খুলে নেওয়ার পাশাপাশি দুই জনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন রায়হান। হেলেনা বেগম বর্তমানে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত রায়হান খানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

ইউপি সদস্য উজ্জল সরকার বলেন, হেলেনা বেগমের মোবাইল থেকে একটি ফোন আসে, যে সে শিবরামপুরে দুঘর্টনার শিকার হয়েছে। ফোন পেয়েই সেখানে যাই। পরে তাকে রিকশায় করে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে ফেরার পথে আমাকে কয়েকজন যুবক ওই মহিলা মেম্বারের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। পরে দুই জনকে ধরে এনে টাকা দাবি করাসহ দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করে। এ বিষয়ে পাঁচ জনকে অভিযুক্ত করে রাজবাড়ী সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) শরীফ আল রাজীব জানান, এ বিষয়ে সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।