জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য ফাঁসের অভিযোগে সজীব ওয়াজেদ জয়কে প্রধান আসামি করে ১৯ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা হয়েছে। এই মামলায় ১১ নম্বর আসামি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী।
জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) তথ্য ফাঁসের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে প্রধান আসামি করে ১৯ জনসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এই মামলায় ১১ নম্বর আসামি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগ পাওয়া উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী।
এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি বুধবার রাজধানীর কাফরুল থানায় এই মামলা করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাফরুল থানার ওসি কাজী গোলাম মোস্তফা।
তিনি বলেন, ‘মামলা হয়েছে। বাকি তথ্য হেডকোয়ার্টার থেকে দেয়া হবে।’
মামলার এজাহারে বলা হয়, সজীব ওয়াজেদ জয় ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ক্ষমতার অপব্যবহার করে সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে জনগণের জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য বিক্রি করেছেন। জাতীয় নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে, ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিসেস লিমিটেডকে এনআইডির তথ্য ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসার অনুমতি দেন অভিযুক্তরা। সেসব তথ্য দেশ ও দেশের বাইরের প্রায় ১৮২টি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করা হয়। তৃতীয় পক্ষের কাছে তথ্য পাচার হওয়ায় জনগণের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে।
এভাবে জনসাধারণের এনআইডির তথ্য বিক্রি করে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগও আনা হয় এই মামলায়।
মামলার আসামিদের মধ্যে সজীব ওয়াজেদ জয় ছাড়াও রয়েছেন- সাবেক ডাক এবং টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক; সাবেক ডাটা সেন্টার পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ; ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিসের পরিচালক ওয়াহিদুর রহমান শরিফ; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম; সাইবার নিরাপত্তা, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ডাক, টেলিযোগযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক নির্বাহী পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাহাবুবুর রহমান; জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক পরিচালক (অপারেশন) আবদুল বাতেন; নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক সিনিয়র মেইন্টেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার মু. আশরাফ হোসেন; ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মো. রাকিবুল হাসান; মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক উপ-সচিব মো. রেজাউল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের অধ্যাপক (সদ্য নিয়োগ পাওয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য) ড. মো. হায়দার আলী; অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহফুজুল; রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, স্থানীয় সরকার বিভাগের সাবেক সিস্টেম এনালিস্ট অলিউল হাসান; তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপসচিব মো. তবিবুর রহমান; জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সাবেক সহকারী পরিচালক মুহা. সরওয়ার হোসেন; জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সাবেক পরিচালক আব্দুল মমিন সরকার; জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম; বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ম্যানেজার (সিকিউরিটি অপারেশন) মোহাম্মদ মহিদুর রহমান খান; ম্যানেজার, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সফটওয়্যার ডেভেলপার মো. সিদ্দীকুর রহমান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাদী এনামুল হক বলেন, ‘এজাহারে আমি আমার বক্তব্য দিয়েছি। সেটিই আমার বক্তব্য।’
এ ব্যাপারে জানতে কুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলীর মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।