ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট ২১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর (ঢাবি) মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট ২১ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছে। অভিযুক্তদের মধ্যে ৬ জন বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন, আর ১৫ জন পলাতক। চার্জশিটে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার উল্লেখ না থাকলেও মামলাটি দেশের শিক্ষাঙ্গনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান গত ১ জানুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন। উল্লেখ্য, গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাবি প্রশাসনের দায়ের করা মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল, যা পরবর্তীতে তদন্তে অভিযুক্ত ২১ শিক্ষার্থীকে শনাক্ত করে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়।
চার্জশিটের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলে ৩৫ বছর বয়সী মানসিক ভারসাম্যহীন তোফাজ্জল হোসেনকে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, হামলাকারীরা চুরি যাওয়া একটি মোবাইল ফোনের ক্ষতিপূরণ হিসেবে তোফাজ্জলের পরিবারের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা দাবি করেছিল। তার চাচা আব্দুর রব মিয়া এই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অভিযুক্তরা ক্ষিপ্ত হয়ে ক্রিকেটের স্টাম্প ও বাঁশের লাঠি দিয়ে তোফাজ্জলকে মারধর করে। গুরুতর আঘাতে রক্তক্ষরণ হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
চার্জশিটে নাম উল্লেখ করা ছয় অভিযুক্ত জালাল মিয়া, আহসান উল্লাহ ওরফে বিপুল শেখ, আল হোসেন সাজ্জাদ, মোত্তাকিন সাকিন সাহ, সুমন মিয়া এবং ওয়াজিবুল আলম কারাগারে রয়েছেন এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
পলাতক ১৫ অভিযুক্ত হলেন ফিরোজ কবির, আবদুস সামাদ, সাকিব রায়হান, ইয়াসিন আলী গাইন, ইয়ামুজ্জামান ইয়াম, ফজলে রাব্বি, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান, রাতুল হাসান, সুলতান মিয়া, নাসির উদ্দিন, মোবাশ্বের বিল্লাহ, শিশির আহমেদ, মহসিন উদ্দিন এবং আব্দুল্লাহিল কাফি। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য আবেদন করা হয়েছে।
মামলাটি নিয়ে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। শাহবাগ থানার পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, “তদন্তে স্পষ্টভাবে ২১ শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তাদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।”
এই ঘটনাটি শুধু একটি হত্যাকাণ্ড নয়, বরং একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কীভাবে নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটছে, তার একটি নির্মম উদাহরণ। বিষয়টি নিয়ে আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না।
-সায়মন ইসলাম
