ভারতের দুই রাজ্য জম্মু-কাশ্মীর ও হরিয়ানার বিধানসভা নির্বাচনের ভোটের ফলাফল প্রকাশ করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। হরিয়ানায় জয়ের হ্যাট্রিক নিশ্চিত করলেও বহুল আলোচিত রাজ্য জম্মু-কাশ্মীরে পরাজিত হয়েছে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)।
নির্বাচনের ফলাফলে দেখা গেছে, জম্মু-কাশ্মীরে বিধানসভার ৯০টি আসনের মধ্যে ৪৯টি আসন জিতেছে ফারুক আবদুল্লাহ এবং তার ছেলে ওমর আবদুল্লাহর দল ন্যাশনাল কনফারেন্সের (এনসি) নেতৃত্বাধীন জোট। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসও এই জোটের অন্তর্ভুক্ত। ভোটের এ ফলাফলকে রাজ্যটিতে কংগ্রেসের ঐতিহাসিক জয় হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট ভারতের সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মাধ্যমে জম্মু-কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যের মর্যাদা বাতিল করে বিজেপি সরকার। সে সময় কেন্দ্রীয় সরকারের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে জম্মু-কাশ্মীরজুড়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলো জেকে-এনসি। গ্রেপ্তার করা হয়েছিলো দলটির অনেক নেতাকর্মীকে। এমনকি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহও দীর্ঘদিন গৃহবন্দি ছিলেন।
এনসি’র নেতারা বলছেন, ভোটের ফলাফলের মধ্যদিয়ে এবার জম্মু-কাশ্মীরের মানুষ বিজেপিকে কড়া বার্তা দিয়েছে।
রাজ্যটিতে বিজেপি ২৯টি আসনে জয় পেয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি) মাত্র তিনটি আসনে জয়ী হয়েছে। আর সিপিএম এবং আম আদমি পার্টি (আপ) একটি করে আসনে জয়ী হয়েছে।
এনসি জোট সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জম্মু-কাশ্মীরের সরকার গঠন করতে ৪৬টি আসনে জয় নিশ্চিত করতে হবে। এনসি এবং কংগ্রেস উভয়ই বিজেপিবিরোধী জোট ‘ইনডিয়া’র শরিক দল, ফলে জম্মু-কাশ্মীরে রাহুল গান্ধীদের সরকার আসছে তা প্রায় নিশ্চিত।
ফলাফল প্রকাশ্যে আসার পরপরই শ্রীনগরে ফারুক আবদুল্লার বাড়ির সামনে উচ্ছ্বাসে মাতলেন এনসি এবং কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকেরা।
২০০৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এনসি পেয়েছিলো ২৮টি আসন। কংগ্রেস জিতেছিল ১৭টি আসনে। আর পিডিপি জয় পেয়েছিল ২১টি আসনে। সেবার কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন ওমর আবদুল্লা। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাস অবধি মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি। সব কিছু ঠিক থাকলে ৯ বছর পরে আবারও মুখ্যমন্ত্রীর আসনে বসতে পারেন তিনি।
মধ্য কাশ্মীরের দুই আসন গান্ডেরবাল এবং বদগামে জয়ী হয়েছেন ওমর আবদুল্লা।
অন্যদিকে রাজৌরি জেলার নওশেরা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী সুরেন্দ্র কুমার চৌধুরীর কাছে পরাজিত হয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের বিজেপি সভাপতি রবীন্দ্র রায়না।
তবে জম্মু-কাশ্মীরে হারলেও হরিয়ানায় জয়ের হ্যাট্রিক নিশ্চিত করেছে বিজেপি। হরিয়ানায় ৯০টি আসনের মধ্যে ৪৮টি আসনে জয়ী হয়েছে বিজেপি। যেখানে সরকার গঠনে প্রয়োজন ৪৬টি আসন। এই রাজ্যে কংগ্রেস জয় পেয়েছে ৩৭টি আসনে, বাকি পাঁচটি আসনে জয়ী হয়েছে অন্যান্য দল।
হরিয়ানার ভোটগণনার শুরুর দিকে কংগ্রেস এগিয়ে থাকলেও, বেলা গড়াতেই সমীকরণ বদলে যায়। কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যায় বিজেপি।