<

বিরামপুরে সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকসহ ১১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

দিনাজপুরের বিরামপুরে তিন বছর আগে সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের উপস্থিতিতে এক সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে রশিদুল ইসলাম (২৫) নামের এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। এতে দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকসহ ১১৩ জনের নাম উল্লেখ এবং ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

নিহত রশিদুল ইসলাম উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের দক্ষিণ কাটলার ধানহাটি এলাকার মৃত নূরুল হুদার ছেলে। এজাহারনামীয় আসামিদের মধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত তিনজন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতা-কর্মীর নাম রয়েছে।

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিপ্লব আলম ওরফে বিলু (৪৭) নামের একজন বিএনপিকর্মী বাদী হয়ে বিরামপুর থানায় এই হত্যা মামলা করেন। মামলার বাদী বিপ্লব আলম উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের উত্তর দাউদপুর গ্রামের মৃত সাহের উদ্দিন সরকারের ছেলে।

মামলা দায়েরের পর আজ সকালে মামলার ৫১ নম্বর আসামি স্বপন হাড়ি (৪০) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার স্বপন কাটলা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের হাড়িপাড়া এলাকার মৃত অভিলাষ হাড়ির ছেলে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর কাটলা ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ইউনুছ আলী মণ্ডল নৌকা প্রতীকে ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নাজির হোসেন আনারস প্রতীকে নির্বাচন করেন। ওই নির্বাচনে রশিদুল ইসলাম আনারস প্রতীকের প্রার্থী নাজির হোসেনের কর্মী হিসেবে কাজ করেন। নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ইউনুছ আলী মণ্ডল বিজয়ী হন। পরে ২০২২ সালের ৫ জানুয়ারি বেলা তিনটার দিকে কাটলা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুছ আলী মণ্ডলের সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর-৬ আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালে আনারস প্রতীকের কর্মী রশিদুল ইসলাম কাটলাবাজারে অবস্থান করছেন—এমন একটি সংবাদ নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুছ আলী মণ্ডল মঞ্চে থাকা সংসদ সদস্য শিবলী সাদিককে দেন। এ সময় শিবলী সাদিক রশিদুল ইসলামকে ধরে আনার নির্দেশ দেন। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ও মামলার ৩৩ জন আসামি ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে কাটলাবাজারের খাদ্যগুদামের সামনে থেকে রশিদুল ইসলামকে ধরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানস্থলে নিয়ে আসেন। এ সময় শিবলী সাদিকের নির্দেশে আসামিরা অনুষ্ঠানের প্যান্ডেল নির্মাণের কাজে পড়ে থাকা বাঁশের লাঠি ও লোহার রড দিয়ে রশিদুল ইসলামের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই রশিদুল ইসলাম মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকালে তাঁর থানায় ১১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা হয়েছে। মামলার পর স্বপন হাড়ি নামের এজাহারনামীয় এক আসামিকে সকালেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই আসামিকে দুপুরে দিনাজপুর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।