<

পার্কিংয়ের কারণে সংকুচিত সড়ক, ভোগান্তি চরমে

রাজধানীর সড়ক আর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে কম-বেশি কাজ হলেও অনেকটা অবহেলিতই থেকে গেছে পার্কিংয়ের বিষয়টি। বিচ্ছিন্নভাবে সড়কের পাশে গাড়ি রাখায় সড়ক সংকুচিত হয়ে বাড়াচ্ছে যানজট। এমন বাস্তবতায় গণপরিবহনকে প্রাধান্য দিয়ে প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক পার্কিংয়ের পথে হাঁটতে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। 

ট্রাফিক সিগনাল মেনে চলার বার্তা শোভা পাচ্ছে স্কুলের দেয়ালে। ঠিক তার পাশেই মূল সড়কের ওপর একাধিক লেনে পার্কিং করে রাখা গাড়ি। ঘটনাটি ধানমন্ডির একটি স্কুলের সামনে হলেও রাজধানীতে প্রাত্যহিক বাস্তবতা এটি। গবেষণা বলছে, ঢাকার যানজটের ৩০ শতাংশের জন্য দায়ী যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং। চলাচল করা ৮০ শতাংশ গাড়িই পার্ক করা হয় রাস্তার ওপরে

পথচারীরা জানান, সড়কের পাশে স্কুল দিয়েছে কিন্তু পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। প্রতিষ্ঠানের নিজেদের পার্কিং না থাকলে কিছু করার নেই। তখন সড়কের ওপরেই গাড়ি রাখতে হয়। রাজউক থেকে সেন্ট্রাল কোনো পার্কিং বিল্ডিং হতে পারে। এই বিল্ডিং থেকে হাঁটার রাস্তা ৫ থেকে ৬ রমিনিটের হতে পারে।

নিয়ম বহির্ভূত গাড়ি পার্কিং বন্ধ করা ও যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা আনতে, ২০১৯ সালে পার্কিং নীতিমালা করে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ। এতে বলা হয়েছে, পার্কিং করতে হবে নির্ধারিত স্থানে। বহুতল পার্কিং এর ব্যবস্থা রাখতে হবে জনবহুল ও বাণিজ্যিক এলাকায়। কেবল চিহ্নিত করা সড়কেই রাখা যাবে গাড়ি। মেনে চলতে হবে ভবন নির্মাণ নীতিমালায় পার্কিং এর জায়গা রাখার বাধ্যবাধকতা। বলা বাহুল্য, কাজীর গরু কেতাবে থাকার মতো এসবের বাস্তবায়নও অদৃশ্য।

নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ২০২৮ সালে মার্কেট বিল্ডিংয়ে পার্কিং বাধ্যবাধকতা করেছিলাম। কিন্তু বিপণিবিতানগুলো সামনের সড়কটি পার্কিংয়ের জন্য ব্যবহার করে এবং স্থানীয়দের ম্যানেজ করে চলে। প্রতিটি ভবন মনিটর করতে না পারলে, অবৈধ পার্কিং হচ্ছে কি না এটি যদি মনিটর করা না যায় তাহলে শহর চলবে না।

৯ বছর আগে রাজধানীতে প্রথম মেকানিক্যাল পার্কিং ব্যবস্থা চালু হয় মৎস্য ভবনে। পরে আরও ৬ টি জায়গায় এমন ব্যবস্থা চালু হলেও, এর সবগুলোই সরকারি কাজে ব্যবহার হয় সুযোগ নেই সাধারণ ব্যবহারের।

এমন ব্যবস্থাকে সমাধান মানছেন বিশেষজ্ঞরাও। বলছেন, সরকারি-বেসরকারি অংশিদারিত্বে বাণিজ্যিকভাবে এলাকাভিত্তিক হতে পারে এমন পার্কিং।

যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. হাদিউজ্জামান বলেন, মেকানিক্যাল পার্কিংয়ে ট্রে থাকে। এখানে গাড়ি চালক ট্রেতে গাড়িটি রেখে বাটন চাপলে সেটি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে পার্কিং স্লটে চলে যাবে। এখানে সবচেয়ে সুবিধার বিষয় হচ্ছে এই পার্কিং স্লটটি চাইলে সিরিয়ে অন্য কোথাও স্থাপন করা সম্ভব। দেখা গেল যেখানে এই স্লটটি রাখা হয়েছে সেখানে গাড়ি পার্কিংয়ের চাহিদা তেমন নেই। তখন সেটি অন্য কোথাও ৭ দিনের মধ্যে স্থাপন করা সম্ভব।   

ঢাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে রাস্তা আছে প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার। এতে ৫ থেকে ৬ লাখ যানবাহন ভালোভাবে চলার সক্ষমতা থাকলেও এখন চলে প্রায় ২০ লাখ।